সন্তানের ঈমান-আকিদা, আমল-আখলাক ও জীবনযাপনের প্রতিটি বিচ্যুতির বিষয়ে প্রত্যেক মা-বাবাকে পরকালে জবাবদিহির সম্মুখীন করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তিই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার অধীনদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। (বুখারি, হাদিস : ৭১৩৮)
দায়িত্বসচেতন মা-বাবার কর্তব্য হলো শৈশব থেকেই সন্তানকে ধর্মীয় অনুশাসনে গড়ে তোলা।
২. শিশুর কানে তাওহিদ ও রিসালাতের বাণী পৌঁছানো : জন্মের পর সন্তানের প্রথম শ্রবণ যেন তাওহিদ, রিসালাত ও আল্লাহর বড়ত্ব দিয়ে শুরু হয়। নামাজ ও কল্যাণের প্রতি আহ্বানসহ তাওহিদ, রিসালাত ও আল্লাহর বড়ত্ব দিয়ে সাজানো আজান-ইকামতের ধ্বনি শুনিয়ে দেওয়া নবীজির নির্দেশিত একটি পন্থা। হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যার সন্তান হয়, সে যেন তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেয়। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৮৬১৯)
৩. সন্তানকে ভালো ও সুন্দর উপদেশ দেওয়া : সন্তান যখন বুঝে উঠতে শুরু করে তখন তাকে বিভিন্ন সৎ উপদেশ দিতে থাকবে। সন্তানকে দেওয়া লোকমান হাকিমের সেই উপদেশ ও শিক্ষাগুলো পবিত্র কোরআন থেকে তুলে ধরা হলো—
একত্ববাদের শিক্ষা : ‘হে পুত্র, আল্লাহর সঙ্গে শরিক করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা মহা অন্যায়।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৩)
তাকওয়ার শিক্ষা : ‘হে পুত্র! যদি তা (পাপ-পুণ্য) হয় সরিষার দানার সমান এবং তা থাকে পাথরের ভেতর অথবা আসমান জমিনের যেকোনো স্থানে, আল্লাহ তা উপস্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী।’ (সুরা : লোকমান : আয়াত : ১৬)
আল্লাহর আনুগত্যের শিক্ষা : ‘হে পুত্র! নামাজ কায়েম করো, মানুষকে সৎকাজের আদেশ করো, মন্দ কাজে বাধা দাও এবং তোমার যে কষ্ট দেখা দেয়, তাতে ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয়ই এটা অত্যন্ত দৃঢ় ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৭)
শিষ্টাচার শিক্ষা : ‘মানুষের সামনে (অহংকারে) নিজ গাল ফুলিয়ো না এবং ভূমিতে দর্পভরে চলিয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দর্পিত অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৮)
ভদ্রতা ও শালীনতার শিক্ষা : ‘নিজ পদচারণে মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং নিজ কণ্ঠস্বর সংযত রেখো। নিশ্চয়ই সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট স্বর গাধাদেরই স্বর।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৯)। আল্লাহ কবুল করুন।