চীনে সাত বছর পর ঐতিহাসিক সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এক ‘অস্থির ও বিশৃঙ্খল’ বিশ্বে নিজেদের বন্ধুত্বকে সামনে তুলে ধরেছেন। চীনের সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার এই বৈঠক হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে উভয় দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর শুল্কনীতির মুখে পড়েছে। খবর: সিএনএন।
চীনের বন্দরনগরী তিয়ানজিনে এ বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক হয়। এ সাক্ষাৎ শুধু সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা নয়, বরং ক্রমবর্ধমান মার্কিন চাপের মুখে এশীয় দুই পরাশক্তির নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত বহন করে।
বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, “বিশ্ব এখন শতাব্দীতে একবার দেখা যায় এমন রূপান্তরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি একইসঙ্গে জটিল ও বিশৃঙ্খল। তাই আমাদের পক্ষে সঠিক পথ হলো বন্ধুত্ব—শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশী হয়ে একে অপরের সাফল্যে অংশীদার হওয়া।” তিনি প্রতীকী ভাষায় আরও বলেন, “ড্রাগন ও হাতি যদি একসঙ্গে নাচে, তবে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে উঠবে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, ভারত পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি ইঙ্গিত দেন, হিমালয় সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাসের পদক্ষেপই তার প্রমাণ। মোদির ভাষায়, “আমাদের দুই দেশের ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ সরাসরি নির্ভর করছে এই সহযোগিতার ওপর।”
বৈঠকের সময় দিল্লি–বেইজিং সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনে রয়েছে। চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের রপ্তানি পণ্যে ২৫% শুল্ক বসানোর পাশাপাশি রাশিয়ার তেল–গ্যাস আমদানির কারণে অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করেছেন। ওয়াশিংটনের মতে, রাশিয়ার জ্বালানি কেনা মানেই ইউক্রেন যুদ্ধকে অর্থ জোগানো। তবে রুশ তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা চীনের ওপর এখনো এমন পদক্ষেপ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকের আগের দিন মোদি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি জানান, ‘চলমান সংঘাত নিয়ে মতবিনিময় করেছি।’ ভারত আগেও জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো পক্ষ নিচ্ছে না।





