রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের একটি ‘অশালীন ভিডিও’ ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা চলছে। আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় নেতাকর্মীরাও বিব্রত। অশালীন ভিডিওটিকে ‘সম্পাদিত’ দাবি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। নেতাকর্মীরা শুধু মামলা নয়, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য জনসম্মুখে উঠে আসুক-এমন প্রত্যাশা করছেন। কেন না এর আগেও একজন যুবলীগ নেতার ‘বিকৃত যৌন কেলঙ্কারির’ অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল এবং ভিডিওতে থাকা ভুক্তভোগী কিশোর গুম-অপহরণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এই ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি দলীয় ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন নেতৃবৃন্দ। জনগণের কাছে ভাবমূর্তি ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
নেতাকর্মীরা বলেন, যেহেতু রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদের নেতা ডাবলু সরকার। সেহেতু তার এই আপত্তিকর ভিডিও’র সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে দলের ভাবমূর্তির প্রশ্নটিও জড়িত। তাই নিরপেক্ষভাবে সাংগঠনিক ও আইনি তদন্ত হওয়া উচিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু সরকারসহ অনেকে দেখেছেন।
যাতে দেখা যায়, বাথরুমের ভেতরে ডাবলু সরকার একজনের সঙ্গে ভিডিও কলে বিবস্ত্র অবস্থায় কথা বলছেন। তবে ভিডিও’র অপর প্রান্তে কে আছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে কী কথা হচ্ছে তাও শোনা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অশালীন ভিডিওটিকে ভুয়া দাবি করে থানায় মামলা করেছেন ডাবলু সরকার।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, একটি অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, কে বা কারা তাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে এডিট করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করেছে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার কথা ওই অনলাইন পোর্টালে লেখা থাকলেও সেটি কোথাও পাওয়া যায়নি। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন। ওসি বলেন, একটি ভিডিও নিয়ে আওয়ামী নেতা ডাবলু সরকার বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। এটি তদন্ত হবে। তদন্তেই বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা কী।
ভিডিও’র বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু সরকার বলেন, ভিডিওটি এডিট করা। আমি অনেক সময় জিমে খালি গায়ে থাকি। সেখান থেকে ভিডিওটি নিয়ে অন্য ব্যক্তির শরীরের নিচের অংশের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমি মামলা করেছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন বলেন, ভিডিওটি নিয়ে আমরা বেশ বিব্রতকর অবস্থায় আছি। ভিডিওটি সত্য না মিথ্যা তাও বুঝতে পারছি না। এজন্য আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করুক। যদি সত্য হয়, তাহলে ডাবলু সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে। আর মিথ্যে হলে দোষীরা আইনের আওতায় আসবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, নিঃসন্দেহে বিষয়টি স্পর্শকাতর। আমি ভিডিওটি দেখিনি। শুনেছি। ভিডিওটি সত্য না মিথ্যা তা নিরূপণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।