ফিফটি হাঁকালেন তিনজন- নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহীম এবং সাকিব আল হাসান। তাদের মধ্যে মুশফিক-সাকিব ছুঁলেন সত্তরের ঘর। তিন ব্যাটার পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করলেও বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ স্পর্শ করেনি আড়াইশ’র কোঠা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ২৪৬ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। টস জিতে টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা শুরুতে ব্যাটিং করব। উইকেট শুষ্ক মনে হচ্ছে। চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। আশা করছি, দ্বিতীয় ইনিংসে এই উইকেট স্পিন সহায়ক হবে। আশা করছি, আমাদের ব্যাটাররা আজ ভালো করবেন।’ শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তে আশা দেখলেও জুতসই ব্যাট করতে পারেনি টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব-মুশফিকদের ইনিংসে ভর করে ২৪৭ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে স্যাম কারেনের ডেলিভারি খেলতে গিয়ে আদিল রশিদের তালুবন্দি হন লিটন কুমার দাস। ৩ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি এই ব্যাটার। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলীয় সংগ্রহে মাত্র ১৬ রান যোগ করে। ৬ বলে ১১ রান করে স্যাম কারেনেরই শিকার হন তামিম ইকবাল। শুরুর ধাক্কা সামলে ধীর গতির ব্যাটিংয়ে ৯৮ রানের পার্টনরাশিপ গড়েন নাজমুল হাসান শান্ত ও মুশফিকুর রহীম। ৭১ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৩ রান করে শান্ত আউট হলে ভাঙে এই জুটি। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে মুশফিকের সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাবে কাটা পড়ে শান্তর উইকেট। দলীয় ১৫৩ রানে চতুর্থ উইকেট হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহীম। ৩২.৪ ওভারে আদিল রশিদের শিকার হওয়ার আগে ৯৩ বলে ৬ চারে ৭০ রান করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। কিন্তু তিনি ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ। দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে কাটিয়েও আদিল রশিদের এক ডেলিভারিতে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন মুশফিক। এরপর দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৯ বলে ৮ রান করেন তিনি। আদিল রশিদকে ছক্কা হাঁকানোর পর বাজেভাবে বোল্ড হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। রিয়াদের বিদায়ে ১৬৩ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আফিফ হোসেনের সংগ্রহ ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৫ রান। এরপর দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ (৫) এবং তাইজুল ইসলাম (২)। পাঁচে নামা সাকিব আল হাসান টিকে ছিলেন নবম উইকেট পর্যন্ত। টাইগারদের ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহও তার। ৭১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৭৫ রান করেন সাকিব। গোল্ডেন ডাক মারেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩ বলে ১* রান ইবাদত হোসেনের।
৮.৫ ওভার বল করে ৩৫ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন ইংলিশ পেসার জফরা আর্চার। দুটি করে উইকেট পান স্যাম কারেন ও আদিল রশিদ। একটি করে উইকেট পান ক্রিস ওকস এবং অভিষিক্ত রেহান আহমেদ।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টাইগারদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৩০৬ রান। ২০০৬ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই রান করেছিল বাংলাদেশ। ২০২১ সালে এই ভেন্যুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৯৭ রান করে টাইগাররা। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক ওয়ানডে ম্যাচে সংগ্রহ ছিল ২৮৮ রান । ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২৮১ রান করেছিল টাইগাররা। সাগরিকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২৭৭ রান। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এক ম্যাচে এই রান করেছিল টাইগাররা। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যথাক্রমে ২৫১ এবং ২৫০ রান তোলে টাইগাররা। গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা ২৪৬ রান সাগরিকায় বাংলাদেশের অষ্টম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। সব দলের বিচারে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের তালিকায় ১৪তম। সাগরিকায় ওয়ানডে ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভারতের। ২০২২ সালের ১০ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৪০৯ রান তুলেছিল ভারতীয়রা।