ঢাকামঙ্গলবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

একের পর এক নতুন নতুন সঙ্কট যেন পেয়ে বসছে রাজধানীবাসীকে

অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩ ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ । ৯৮ জন
রাজধানীসহ আশপাশের সঙ্কটে নাকাল এলাকাবাসী

দৈনন্দিন নানা সঙ্কটের মধ্যে একের পর এক নতুন নতুন সঙ্কট যেন পেয়ে বসছে রাজধানীবাসীকে। দিনরাত নানা সঙ্কটে পড়ে যখন নাকাল হচ্ছেন রাজধানীবাসী, তখন মাসের পর মাস তারা গুনছেন নিয়মিত গ্যাস বিল। কিন্তু গৃহস্থালির কাজে যখন চুলা জ্বালানো হয় তখন থাকেনা গ্যাস। দিনের অধিকাংশ সময় ধরে চুলা না জ্বলার কারণে পারিবারিক জীবনের শিডিউলও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। রাজধানীর ভেতরে গ্যাস সঙ্কট চলছে গত তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে। দিনের এক একটা সময় ধরে রুটিন করে রেশনিংয়ের পর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও জীবনযাত্রা ‘জেরবার’। রাজধানীর বাইরেও গ্যাস সঙ্কট চলছে। এ যেন এক নতুন যন্ত্রণা। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড বলছে, সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস সঙ্কট চলছে। মার্চ মাস নাগাদ এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। তিতাস জানায়, এ সময়ের মধ্যে লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হয়ে যাবে।

যোগাযোগ করা হলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া গত বুধবার সন্ধ্যায় দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, প্রতিদিন ১৭ এমএমসিএফটি গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। অথচ পাওয়া যাচ্ছে ১৪ এমএমসিএফটির কমবেশি। প্রায় ৩ এমএমসিএফটি গ্যাসের ঘাটতি আছে। সরবরাহ কম থাকায় গ্রাহকরা তাদের চাহিদা মাফিক গ্যাস পাচ্ছেন না। আগামী মার্চ মাসে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে বলে তিনি আশাবাদি। তিনি জানান, এর মধ্যেই গ্যাস উত্তোলন না বাড়লেও বিদেশ থেকে এলএনজি আসবে। তিতাসের গ্রাহক পর্যায়েই গ্যাসের সঙ্কট চলছে।

সরকার গত ১৮ জানুয়ারি প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৮২ শতাংশ বাড়িয়েছে। তবে বাসাবাড়িতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি। বাসায় দুই চুলার ক্ষেত্রে মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ টাকা এবং এক চুলার ক্ষেত্রে ৯৯০ টাকা। এর মধ্যেই সম্প্রতি দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম একলাফে ২৬৬ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। চলতি ফেব্রুয়ারির জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা, যা জানুয়ারি মাসে ছিল ১ হাজার ২৩২ টাকা।

তিতাস সূত্র জানায়, শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার আশপাশের এলাকা সাভার, গাজীপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ থাকছে না। ফলে উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে এসব এলাকার শিল্প কারখানাগুলোর।

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের শেষের দিকে সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি না করা পর্যন্ত চলমান গ্যাস সংকট কাটানো কঠিন।

তিতাস গ্যাস কোম্পানী জানায়, তিতাস গ্যাস বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নরসিংদী, নেত্রকোনা, ও কিশোরগঞ্জ জেলায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত। বর্তমানে কোম্পানি ১৩,৩২০.৩৯ কি.মি. পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করছে। ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত কোম্পানির ক্রমপুঞ্জিত গ্রাহক সংখ্যা ২৮,৭৭,৬০৪টি ছিল। ১৯৬৮ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরররাহের মাধ্যমে তিতাস গ্যাস এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। বিগত পাঁচ দশকে কোম্পানির কার্যপরিধির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে এবং এ যাবতকাল গ্রাহকদের চাহিদানুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করে আসছে। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় গ্রাহকদের চাহিদার বিপরীতে ফিল্ডসমূহ হতে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির পাশাপাশি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে সারা বিশ্বে জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ায় আমদানিকৃত এলএনজিরও স্বল্পতা দেখা দেয়ার কারণে তিতাস অধিভুক্ত কতিপয় এলাকায় স্বল্পচাপ সমস্যা বিরাজমান থাকায় গ্রাহক সেবা কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে। তিতাস, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, কৈলাসটিলা, বিবিয়ানা, মৌলভীবাজার, শ্রীকাইল এবং বাংগুরা গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও বাখরাবাদ, মেঘনা এবং আমদানিকৃত এলএনজি থেকেও সরবরাহ করে থাকে।

২০২০ সালের জুন পর্যন্ত তিতাসের ক্রেতার সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৪ টি। তার মধ্যে আবাসিক ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৪৮ টি। প্রতি বছরই ক্রেতা / গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। উত্তোলন বাড়ছেনা। এর আগে আবাসিক গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ টি। বিগত অর্থ বছরে (২০২১-২২) তিতাস ১৫৬৫৭.২৮৫ এমএমসিএম গ্যাস বিক্রয় করে ১৮ হাজার ৩২৭ দশমিক ৩২ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে , যা থেকে জাতীয় রাজস্বে যোগ হয়েছে ৬৪০ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা।

জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গ্যাস-সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাস থাকে না। গভীর রাতে গ্যাস এলে তাঁদের রান্না করতে হচ্ছে। তবে গ্যাসের চুলায় আগুন থাকুক বা না থাকুক, রান্না হোক বা না হোক, মাস শেষে নির্ধারিত গ্যাস বিল দিতেই হচ্ছে। গ্যাস-সংকটে পড়ে খাবার তৈরীতে লাকড়ি বা ইলেকট্রিক চুলা, রাইস কুকার, স্টোভ বা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে বিকল্প উপায়ে রান্না করতে হচ্ছে। এতে তাঁদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের মৃল্যবৃদ্ধির সঙ্গে গ্যাসের যন্ত্রণা: বাসাবো, বৌদ্ধমন্দির, মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, মগবাজার, মালিবাগ, মিরপুর, উত্তরা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে ক্ষোভের আঁচ পাওয়া গেল। তাঁদের এক কথা, গ্যাস পাচ্ছেন না, কিন্তু গ্যাসের বিল দিতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে হাঁসফাঁস অবস্থার সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্যাসের যন্ত্রণা। শীতকাল বলে বিদ্যুতের বাড়তি দাম দিতে হলেও ভোগান্তি টের পাওয়া যাচ্ছে না, গরমে এ ভোগান্তির মাত্রা কতটুকু বাড়বে, তা ভেবেই একেকজন আঁতকে উঠছিলেন।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জালোওয়াশান আখতার খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সকাল আটটা থেকে বিকেল পর্যন্ত চুলায় গ্যাস সামান্যই থাকে বা থাকেই না। গ্যাসের প্রিপেইড মিটারে এক হাজার টাকা ভরলে এক মাসের কিছু বেশি সময় যায়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ১২ কেজির সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে রান্না করছেন। খরচ বাড়লেও নাতিদের স্কুলের টিফিন দেওয়াসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের কথা ভেবে এভাবেই রান্না করতে হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ীর কাজলার পাড় এলাকার ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেনের চারতলা বাড়িতে ১১টি পরিবার দুই চুলা ব্যবহার করেন। আমজাদ বললেন, রাত একটার দিকে গ্যাস আসে। ভোর হতেই আবার চলে যায়। কোনো দিন ভোরে গ্যাস থাকলেও জ্বলে টিমটিম করে। ছয় মাস আগেও গ্যাসের বিল দিতে হতো ৯৭৫ টাকা, সেই বিল বেড়ে এখন হয়েছে ১ হাজার ৮০ টাকা।

আরেক বাড়ির মালিক আবদুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, রাতে যে সময়টুকু গ্যাস পাওয়া যায়, তাতে অনেক সময় ভাত রান্নাও শেষ করা যায় না। যে নারীরা পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে কাজ করছেন, তাঁরা সারা দিন কাজ করে ঘরে ফিরে রান্নার জন্য রাত জেগে বসে থাকেন। ঘুম হয়নি বলে পরের দিনের কাজে তো আর কোনো ছাড় পাওয়া যায় না।

চলে যাচ্ছেন ভাড়াটেরা: কাজলার পাড় এলাকার বাড়ির মালিক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, গ্যাস-সংকটে এলাকাবাসী ভুগছেন প্রায় তিন বছর ধরে। তবে গত কয়েক মাসে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বললেন, ‘নিজের, ভাড়াটেদের বিলসহ মাসে গ্যাসের বিল দিই ১৩ হাজার টাকা, কিন্তু ১৩ টাকারও লাভ পাই না। ভাড়াটেরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ভাড়াটেদের ধরে রাখতে ভাড়া কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। ভাড়াটেরা মাটির চুলায় রান্না করে ঘরবাড়ি বরবাদ করে দিচ্ছেন। কিন্তু কিছু বলার উপায় নেই।’

বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে জালাল উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার সময় এলাকার শহীদুল ইসলামসহ একাধিক বাড়িওয়ালা, সবজি বিক্রেতা, রিকশাচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন। গ্যাসের প্রসঙ্গে একেকজনের একেক রকম ক্ষোভ। বাড়ির মালিকেরা জানালেন, শুধু রান্নার পেছনেই পরিবারপ্রতি কম করে হলেও পাঁচ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অনেকে ব্যাংকে জমানো টাকা তুলে খাচ্ছেন, অনেকে ঋণ নিয়েও খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

বিকল্প ব্যবস্থায় রান্নায় বেড়েছে খরচ

এলাকার অনেক বাসা, দোকান ও হোটেলে সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহার বেড়েছে। অনেক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, সিলিন্ডারের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ১২ কেজির সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২০০০ টাকা বা তার বেশি দামে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখনো এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ার খবরটি ওই এলাকায় পৌঁছায়নি।

দুই মাস ধরে ‘গ্যাস নেই’ ঢাকার বহু এলাকায়: দিলুরোডে গত দুই মাস ধরে সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। একই অবস্থা মিরপুর-১২, গ্রিনরোড (মোস্তফা সড়ক), মালিবাগসহ অনেক এলাকার। এসব এলাকায় দুই থেকে তিন মাস হলো সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাস পাচ্ছে না গ্রাহকরা। ফলে বাধ্য হয়ে হোটেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে দিন কাটাচ্ছেন এসব মানুষ।

দিলু রোডের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আতিকুল ইসলাম জানান, গত তিন মাস ধরে এই এলাকায় গ্যাসই থাকছে না। সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস থাকেই না। ফলে একরকম দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। হোটেল নির্ভরতার কারণে পেটের নানা অসুখে ভুগছেন এলাকাবাসী। একই অবস্থা গ্রিনরোডের গ্রিন সুপার মার্কেটের পেছনের এলাকায়ও (মোস্তফা সড়ক)। এই এলাকার বাসিন্দারা গত দুই মাস ধরে গ্যাস প্রায় পাচ্ছেনই না বলে অভিযোগ। মালিবাগের অবস্থাও খারাপ। তবে গ্রিন রোড বা দিলুরোডের মতো এত নয়। মালিবাগে গ্যাস থাকে না সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত। ফলে হোটেলগুলোতে খাবারের লাইন পড়ে যায়।

গ্যাসের প্রিপেইড গ্রাহকরা পড়েছেন আরেক ধরনের যন্ত্রণায়। তাদের সমস্যা হলো তারা গ্যাসও ঠিকমতো পাচ্ছেন না আবার খরচও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

মিরপুর-১২ এ গ্রাহক সিরাজুস সালেকীন বলেন, আজ দুই মাস হলো গ্যাস ঠিকমতো থাকে না। পুরো শীতের এই দুই মাস সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত গ্যাসই থাকে না। তিনি আরও জানান, একদিকে গ্যাস পাই না অন্যদিকে খরচও বেড়েছে অনেক। গত জুনে দাম বাড়ার আগে ৫০০ টাকায় ২৮ ইউনিট পেতাম। এতে পুরো

টিকাটুলির কে এম দাস লেনের বাসিন্দা সৈয়দা ফারহানা বলেন, গত তিন-চার বছর ধরে গ্যাস সঙ্কট চলছে। বিশেষ করে শীতের সময় বেশি সঙ্কট হয়। গরমকাল আসলে কিছুটা কমে। কিন্তু এবার শীতকালে সঙ্কট শুরু হওয়ার পর এখনো অব্যাহত রয়েছে। সকাল ৭টার দিকে গ্যাস চলে যায়। এরপর বেলা ৩টায় কিছুটা আসে। সন্ধ্যার পর আবার চাপ কমে যায়। রাত ১২টার পর আবার স্বাভাবিক হয় গ্যাস সরবরাহ। এতে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন এ গৃহবধূ।

মুগদার মদিনাবাগের বাসিন্দা মো: রাজু বলেন, গ্যাস সঙ্কট তো আছেই সম্প্রতি ওই এলাকায় ওয়াসা পানির নতুন লাইন স্থাপন করেছে। এরপর থেকে গ্যাসের লাইন দিয়েও পানি পড়ছে। আর সারাদিন গ্যাস থাকে না। রাত সাড়ে ১১টার পর গ্যাস আসা শুরু হয়। এতে রাত জেগে বাড়ির মহিলাদের রান্না করতে হয়।

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, গ্যাস নিয়ে মানুষের ভোগান্তি সবাই অনুভব করছে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় জানা নেই। দেশে গ্যাসের সংকট রয়েছে। গ্যাসের দাম বিভিন্ন সময় বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের কাছে আবেদন, গ্যাসের আমদানির পরিমাণ বাড়িয়ে বাসাবাড়িতে অন্ততপক্ষে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ দিক।