জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এখন মানুষের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ যে কোনো প্রয়োজনে এই নম্বরে ফোন করে সহায়তা পাচ্ছেন। প্রতিদিন জাতীয় সেবা নম্বরে গড়ে ২৫ হাজার ফোন আসে। সেই হিসাবে চলতি বছর ৩০ লাখ ফোন এসেছে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে। এর মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগ ফোনই আসে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের বহির্ভূত সেবার বিষয়ে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ হাজার ফোন আসে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে। যার মধ্যে ৭৫ ভাগই আসে বিচ্ছিন্ন বিষয়ে। যে বিষয় জাতীয় জরুরি সেবা কার্যক্রমের এখতিয়ার বহির্ভূত। তবে ফোনকারীদের নিরাশ করা হয় না। তাদের প্রয়োজনীয় নম্বর দিয়ে সেবা প্রদান করা হয়।
ফোনকারীদের সঙ্গে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নম্বর দিয়ে ওই নম্বরে যোগাযোগ করে তার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আলোচনা করতে অনুরোধ করা হয়। এ ছাড়া ২৫ ভাগ ফোন আসে জাতীয় জরুরি সেবার অন্তর্গত সেবাসমূহের বিষয়ে। তারা সত্যিকার অর্থেই জেনে-শুনে-বুঝে ফোন করেন। এমনকি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করার বিষয়ে মানুষকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ব্যাপারে মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। তাহলে আরও অনেক মানুষকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। কারণ, অপ্রয়োজনীয় কলের কারণে সেবা সেন্টার স্বাভাবিক কারণেই ব্যস্ত থাকে। এ জন্য অনেক সময়ই হয়ত অনেকেই প্রয়োজনীয় সেবা পেতে কয়েক সেকেন্ড দেরি হয়। অপ্রয়োজনীয় কল না এলে মানুষ আরও বেশি সেবা পাবে। এমনকি মানুষকে আরও বেশি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।’
তিনি জানান, ‘এবার ঈদে সারা দেশ থেকে প্রায় আড়াই হাজার মারামারি-সংক্রান্ত কল এসেছে। এসব কল রিসিভ করে আমরা সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি সেবা প্রদান নিশ্চিত করেছি। কোনো কোনো সময় গুরুত্ব বিবেচনা করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-সম্পর্কিত প্রায় ৫০০ অভিযোগ আসে।
ফোনকারীদের পুলিশি সেবা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দুর্নীতি-সংক্রান্ত, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, যানজট, বায়ুদূষণ, মোবাইল ফোনের এমবি ফুরিয়ে যাওয়া, অগ্নিদুর্ঘটনা, অসামাজিক কর্মকাণ্ড, জুয়াখেলা-সংক্রান্ত প্রায় দেড় হাজারের মতো কল আসে। এর বাইরে নারী ও শিশু নির্যাতন বিষয়ে প্রায় ৬০০ ফোন আসে। সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা ধরনের দুর্ঘটনা-সংক্রান্ত ফোন আসে প্রায় ৭০০, পারিবারিক সমস্যা, জমিজমা-সংক্রান্ত ঝামেলা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা-সংক্রান্ত দেড় হাজারের বেশি ফোন এসেছে।’ পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার আরও জানান, ‘পুরো জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিচালিত হয়। এই সেবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন থানার সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হলে মানুষ আরও বেশি সেবা পাবেন। সে লক্ষ্যে পুলিশ সদর দপ্তর গবেষণাসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করার চেষ্টা করছে। এটি সফল হলে জাতীয় জরুরি সেবা মানুষের একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।’