নামাজ ও জাকাতের পর রোজা অবশ্যপালনীয় বা ফরজ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজা। মাহে রমজান ও রোজার মাসের গুরুত্বও মুমিনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। আগের অনেক আসমানি কিতাব রমজানে নাজিল হওয়ায় এ মাসের মর্যাদা সহজেই অনুমেয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সূরা বাকারার ১৮৩ ও ১৮৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করছেন, ‘হে বিশ্ববাসী! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পার।’ বিনা কারণে রমজানের রোজা ভঙ্গ করা হারাম। যে নারীর ঋতু বা নিফাস হয়েছে তার রোজা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। কোনো মানুষের জান বাঁচানোর জন্য রোজা ভঙ্গ করার দরকার হলে ভঙ্গ করা ওয়াজিব। বৈধ কোনো সফরে রোজা রাখা কষ্টকর হলে বা অসুস্থতার কারণে রোজা রাখায় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত। গর্ভবতী ও সন্তানকে দুগ্ধদায়ী নারী যদি রোজা রাখার কারণে নিজের স্বাস্থ্য বা বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা করে, তবে তার জন্যও রোজা ভঙ্গ করা বৈধ। তবে পরে কাজা আদায় করতে হবে। গর্ভবতী ও দুগ্ধদায়ী নারী বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা করলে রোজা ভঙ্গ করবে এবং তা কাজা করার সঙ্গে প্রতিদিনের বিনিময়ে একজন করে মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে। অতি বৃদ্ধ ও সুস্থ হওয়ার আশা নেই এমন দুরারোগে আক্রান্ত ব্যক্তি রোজা রাখতে অপারগ হলে রোজা ভঙ্গ করে প্রতিদিনের বিনিময়ে একজন করে মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে। তাকে কাজা আদায় করতে হবে না। ওজরের কারণে কোনো মানুষ যদি কাজা রোজা আদায় করতে দেরি করে এমনকি পরবর্তী রমজান এসে যায়, তবে তাকে শুধু কাজা আদায় করলেই চলবে। কিন্তু বিনা ওজরে দেরি করলে কাজা করার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের বিনিময়ে একজন করে মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে। ওজরের কারণে কাজা আদায় করতে না পেরে মৃত্যুবরণ করলে কোনো কিছু আবশ্যক হবে না। কিন্তু কাজা আদায় না করার কোনো ওজর ছিল না তবু করেনি, এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তবে প্রতিদিনের বিনিময়ে একজন করে মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে।
মৃতের নিকটাত্মীয়ের জন্য সুন্নাত হচ্ছে, রমজানের কাজা রোজা এবং মানতের রোজা যা সে আদায় না করেই মৃত্যুবরণ করেছে সেগুলো তার পক্ষ থেকে আদায় করে দেওয়া। রমজানের দিনের বেলায় যদি কোনো বিধর্মী ইসলাম গ্রহণ করে বা ঋতুবতী নারী পবিত্র হয় বা রোগী সুস্থ হয় বা মুসাফির ফেরত আসে বা বালক-বালিকা প্রাপ্তবয়স্ক হয় বা পাগল সুস্থ-বিবেকবান হয়, তবে তাদের ওই দিনের রোজা কাজা আদায় করতে হবে- যদিও তারা দিনের বাকি অংশ খানাপিনা থেকে বিরত থাকে।