ঢাকামঙ্গলবার , ২১ মার্চ ২০২৩
  • অন্যান্য

সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনিয়মই যেন নিয়ম

অনলাইন ডেস্ক
মার্চ ২১, ২০২৩ ৪:০৬ অপরাহ্ণ । ১১০ জন
ছবি: সংগৃহীত

জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ১৭ কোটি মানুষের জন্য দেশে মেডিকেল কলেজ ১১৫টি। সমান সংখ্যক মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেল কলেজ ৮৫টি, যুক্তরাজ্যে ৮০টি, ভারতে ৬৩টি এবং চীনে ১৭টি।
গত রোববার বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন আয়োজিত ২২তম আন্তর্জাতিক কংগ্রেস ও বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এ তথ্য উঠে এসেছে যা প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
২০১৬ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মান খারাপ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত মানছে না।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মালিকদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী আমলা এবং সরকারপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠনের নেতারা রয়েছেন। তবে আমলা ও রাজনীতিবিদেরা কেউ মালিক হিসেবে প্রকাশ্যে নেই। মূলত রাজনৈতিক প্রভাবে এগুলো অনুমোদন পায়।
প্রতিটি মেডিকেল কলেজে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসহ কমপক্ষে আড়াই শ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল (৭০ শতাংশ বেড অকুপেন্সিসহ) চালু থাকতে হবে। হাসপাতালে দরিদ্র রোগীদের জন্য বিনা ভাড়ায় অন্তত ১০ শতাংশ শয্যা সংরক্ষণসহ বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। হাসপাতালে সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম চালু থাকতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ শর্ত মানা হয়নি।
মেডিকেল কলেজগুলোর দুর্বল অবকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষকস্বল্পতা প্রকট। দেশে মেডিকেল শিক্ষা চলছে পুরানো পাঠ্যসূচিতে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়ও দুর্বলতা আছে। আছে বৈষম্যও। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর চেয়ে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর নম্বর প্রায় ৪০ কম থাকে। এত পার্থক্য থাকা উচিত নয়, ভর্তি পরীক্ষা আরো কঠিন হওয়া উচিত। ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু মেধাকে গুরুত্ব দেওয়া ঠিক নয়, শিক্ষার্থীর সামগ্রিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকা দরকার। মেডিকেল শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীর আগ্রহ কতটুকু আছে, শিক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে আর দক্ষতা-যোগ্যতা কী – এসব যাচাই করে ভর্তি করলে মানসম্পন্ন চিকিৎসক পাওয়া যাবে। এমবিবিএস পাস করার পর পেশা চর্চা শুরুর আগে একটি লাইসেন্সিং পরীক্ষা হওয়া দরকার।
নীতিমালা অনুসরণ না করে স্থাপিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা জরুরি। মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ইতিমধ্যে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাঠক্রম পরিবর্তনের পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নতি করতে হবে, পর্যাপ্ত জনবল দিতে হবে।