ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আবার নাটকীয়তা শুরু হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট জেবা চৌধুরীকে হুমকি দেয়ার মামলায় সোমবার তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। পাকিস্তানি মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, ওইদিনই নির্দেশ পাওয়ার পর হেলিকপ্টারে করে তাকে গ্রেপ্তার করতে লাহোরে যাত্রা করে ইসলামাবাদ পুলিশ। এরপর কেটে গেছে একটি রাত। সকালে জানা যাচ্ছে, ইমরান খানকে ‘পরবর্তী ২৪ ঘন্টার’ মধ্যে গ্রেপ্তার করতে পারে পুলিশ। তারা লাহোরের জামান পার্কে অবস্থিত ইমরানের বাসভবনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে। তবে এসব গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থোরাই কেয়ার করছেন ইমরান। তিনি উল্টো আগামী ১৯শে মার্চ লাহোরে অবস্থিত মিনারে পাকিস্তানে ‘ঐতিহাসিক’ এক জনসভার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার তিনি বুলেটপ্রুফ গাড়ির ভিতর থেকে ডাটা দরবারের কাছে এক নির্বাচনী র্যালিতে অংশ নিয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন।
সূত্রগুলো বলেছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তারের জন্য ইসলামাবাদ ও লাহোর পুলিশ কর্মকর্তারা মিটিং করেছেন। এ নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার একই বাসভবনে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন তারা।
ওই মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ইসলামাবাদ পুলিশকে এক্ষেত্রে পুরোপুরি সমর্থন দেয়া হবে। এবার যাতে জামান পার্কের বাসভবনে পুলিশ কোনো বাধা ছাড়াই প্রবেশ করতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে। সূত্র বলেছে, জামান পার্কের উদ্দেশে ইসলামাবাদ পুলিশ যাত্রা করার আগে ইমরান খানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে তারা যোগাযোগ করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২০শে আগস্ট এফ-৯ পার্কে এক র্যালিতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেবা চৌধুরী এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছিলেন ইমরান। এর মধ্য দিয়ে তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন-এই মর্মে মামলা হয়। এতে আরও বলা হয়, পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদেরকে তাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা পালনে বাধা দেয়া হচ্ছিল। ইসলামাবাদের মারগালা পুলিশ স্টেশনের ম্যাজিস্ট্রেট আলি জাভেদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়। তবে গত বছর সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসের অভিযোগ থেকে ইমরানকে মুক্তি দেয় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলা সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণ করে।
এর আগে তোশাখানা মামলায় ৫ই মার্চ ওই জামান পার্কের বাসভবনে ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বাধা পায় ইসলামাবাদ পুলিশ। তারা পিটিআইয়ের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে ফিরে এসে বলে ওই বাসভবনে ইমরান খান ছিলেন না। ফলে তাদেরকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়। তবে এর পরপরই ওই বাসভবন থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান। এতে পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ইমরান খানও কয়েকটি আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু সবখানেই তিনি ব্যর্থ হন। পরে তার আবেদন গৃহীত হয় আদালতে। এ নিয়ে একের পর এক নাটক মঞ্চায়ন হতে থাকে পাকিস্তানে।
সোমবার দিনের শুরুতে সিভিল জজ রানা মুজাহিদ রহিম তিন পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করেন। তাতে ইমরান খান বার বার আদালতে উপস্থিত না হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি।