fgh
ঢাকাশনিবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

admin
ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫ ১:১৮ অপরাহ্ণ । ৯ জন

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ৫৭তম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় গৃহীত হয়নি এমন সিদ্ধান্ত  রিজেন্ট বোর্ডের নামে অফিস আদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের পদোন্নতি ও পর্যায়োন্নয়নের জন্য গঠিত বাছাই বোর্ডে ২৪ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। স্ক্রুটিনি কমিটি আবেদন যাচাই শেষে ওই তালিকা বাছাই বোর্ডে পাঠায়।

কিন্তু বাছাই বোর্ডের সুপারিশের পর নতুন করে আরেকটি কমিটি গঠন করেন ভাইস চ্যান্সেলর, যা বিধিবহির্ভূত। পুনরায় আবেদন ও ব্যক্তিগত ফাইল পর্যালোচনা করে ২৪ জনের পরিবর্তে মাত্র তিনজনকে পদোন্নতি ও পর্যায়োন্নয়নের জন্য সুপারিশ করে ওই কমিটি।রিজেন্ট বোর্ডের আলোচ্যসূচির ৭ নম্বর অনুযায়ী ২৪ জনের মধ্যে ২১ জনের পদোন্নতি ও পর্যায়োন্নয়ন স্থগিত রেখে মাত্র তিনজনের ক্ষেত্রে তা অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে পরে ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠকের পর রিজেন্ট বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই আরো চারজনের নাম যুক্ত করে অফিস আদেশ জারি করা হয়।

এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের কর্মসূচিতেও এ অনিয়মের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ইসমা আক্তার ইপি নামের এক ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে অর্গানোগ্রামে পদ না থাকা সত্ত্বেও সেকশন কর্মকর্তা দেখিয়ে সপ্তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়, যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। বিধি অনুযায়ী তিনি কেবল উচ্চতর গ্রেড পেতে পারেন, পদোন্নতি নয়।

রিজেন্ট বোর্ডে কোনো আলোচনা ছাড়াই এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করা হয়।অন্যদিকে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার কর্মচারী মো. মাহমুদুল হাসানকে অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ না করেই উচ্চতর গ্রেড প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগের সময় জমা দেওয়া অভিজ্ঞতার সনদও যথাযথ যাচাই করা হয়নি বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিজেন্ট বোর্ডের এক সদস্য বলেন, ‘রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ইচ্ছামতো অফিস আদেশ জারি করা হলে রিজেন্ট বোর্ডের সভার প্রয়োজন কি? এটি স্পষ্টই বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা।’

এদিকে ৫৭তম রিজেন্ট বোর্ডে ৩৪ জন শিক্ষককে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের লোক। একই সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অবৈতনিক ছুটিতে থেকেও বাস্তব শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা ছাড়াই পদোন্নতি পেয়েছেন।ডিভিএম ও এনিমাল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রি বাতিল করে তথাকথিত ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়। বিষয়টি আদালতে গেলে হাইকোর্ট তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তবে ওই স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস ও পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, যা আদালত অবমাননার শামিল বলে আইনজ্ঞরা মনে করছেন।

পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে বোর্ডের সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অধ্যাপক ড. নাজিম আহমাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো লাভ নেই। আমি এ নিয়ে কোনো কথা বলব না। বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। চূড়ান্তভাবে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা আমাদের এখনও জানানো হয়নি। আমাদের জানানো হলে পরিসমর্থনের সময় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হলে ভেটো দেব।

ড. নাজিম বলেন, সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত হলে পরিসমর্থনের সময় সবাই প্রতিবাদ করবে। এটা তিনজন বা সাতজনের বিষয় নয়। কেউ আপিল করলে সেটি আপিল বোর্ডে যাবে এবং আইন কর্মকর্তার মতামত নেওয়া হবে। আমি কোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পারব না। রিজেন্ট বোর্ডের নতুন সদস্য হিসেবে ভেতরের বা বাইরের কিছুই আমি জানি না। যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে কেউ আপিল করতে পারে।

পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও বাকৃবির সাবেক অধ্যাপক ড. মো. জহির উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি। আপনি আমার কাছ থেকে কী তথ্য নেবেন? আমি কথা বলতে আগ্রহী নই। অফিসের কাজে ব্যস্ত আছি।’

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার পবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর ও রেজিস্ট্রারকে কলে দেওয়া হলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।