ঢাকারবিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

ডিম-মুরগিসহ খাদ্যপণ্যের দাম যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩ ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ । ১৫৮ জন
খাদ্যপণ্যের বাড়তি দাম গুনতে গিয়ে দিশেহারা মানুষ

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের বাড়তি দাম গুনতে গিয়ে দিশেহারা মানুষ। বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ,সিলেটে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা বেড়ে ২৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ডিমও। এক হালি মুরগির ডিম কিনতে এখন ৪৮-৫০ টাকায়। ফলে মুরগি-ডিম খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকদের।
এ সপ্তাহে নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি। রসুনের দাম কেজিতে কমেছে ২০-৩০ টাকা। সবজির বাজারও স্বাভাবিক রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও বোতলজাত গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পর মুরগির খাদ্যেরও দামও বেড়ে গেছে। প্রোডাকশন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে মুরগির বাচ্চা ও ব্রয়লার দাম বাড়ছে। ঢাকা থেকে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে তাদের।
ঘাসিটুলা মোকামবাড়ি বাজারে মুরগি কিনতে আসা কুলসুমা বেগম জানান, ব্রয়লার মুরগি নাগালের মধ্যে নেই। গরু-খাসির মাংসের দাম আগে থেকেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। তিনি বলেন, যে মুরগি কেজি ১৪০-১৫০ টাকায় কিনেছি সেটি বিক্রি হচ্ছে ২৩৫ টাকায়৷ তাই মুরগি না কিনেই যেতে হবে। লাল মোরগের দামও বেড়ে যাওয়ায় সন্তানদের পাতে ডিম-মাংস তুলে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়েছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। আর লাল মুরগি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা দরে। নগরীর রিকাবীবাজারে সবজি কিনতে আসা তালেব হোসেন নামের এক শিক্ষক জানান, প্রতিদিন কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। সবজি থেকে শুরু করে কোনো পণ্যের দাম কমতে শুনছি না। শুধু বাড়তেই আছে। কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডাল (ছোট) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা। বড় মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছ ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংসের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগররীর রিকাবীবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদীনা মার্কেট ও মেডিকেল রোডসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, দোকানে পর্যাপ্ত সবজি সরবরাহ থাকলেও দাম তুলনামূলক বেশি। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১৪০-১৫০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, ফুলকপির কেজি ২৫ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা ও পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও মিডিয়াম সাইজের প্রতি পিস লাউ ৫০-৬০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, প্রতি আটি লাল ও পালং শাক ১০-১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব শাকসবজির দাম কেজিতে দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা। সবজি বিক্রেতা নুরুল ইসলাম জানান, সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে শিমের বিচির দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহেও শিমের বিচি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ সেই শিমের বিচি প্রতি কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
খুলনার বাজারে বেড়েছে সবজির দাম: খুলনার বাজারে আবারও বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো সবজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়াও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, ডিম ও কাঁচামরিচ। বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। শসা প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা, লম্বা ও গোল বেগুন ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, করলা ১০০-১১০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা, কেজিপ্রতি মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবগুলো সবজি এক সপ্তাহ আগেও ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। এছাড়াও বাজারে কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। লেবুর হালি ২০-৩০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। তবে কমেছে রসুনের দাম। বড় রসুনের কেজি ২০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও দেশি বড় রসুনের কেজি ছিল ২২০ টাকা। ছোট রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। নগরীর জোড়াকল বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা হামিদুর রহমান বলেন, কোন সময় কোন পণ্যের দাম বাড়ে তা কেউ বলতে পারে না। আমাদের খেতে হয়, তাই বাধ্য হয়েই কিনছি। মিনারা বেগম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কাল সকালে কিনেছি এক দামে আজ আরেক দামে কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামত পণ্যের দাম বাড়িয়ে বলে- সরবরাহ কম। কিন্তু বাজারে তো কোনো পণ্যের কমতি দেখি না।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্যাকেটজাত আটার কেজি ৬৫ টাকা। আগে ছিল ৭০ টাকা। দুই কেজির প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকা। লবণের কেজি ৩৮-৪০ টাকা।
বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২১০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ১৯০-২০০ টাকা। সোনালী মুরগির দাম কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩১০-৩২০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি ২৮০-২৯০ টাকা। বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। এখন গরুর মাংসের কেজি ৬৫০-৭০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।