ঢাকাশনিবার , ২৯ এপ্রিল ২০২৩
  • অন্যান্য

আইসিইউ সেবা বন্ধ,চিকিৎসার প্রয়োজন এমন রোগীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ২৯, ২০২৩ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ । ৬০ জন
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) এসি নষ্ট। তাই আইসিইউ সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতালটির পুরো আইসিইউই এখন ফাঁকা। আইসিইউই নষ্ট এই কথা শুনে প্রতিদিন হৃদরোগের চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী ফেরত যাচ্ছেন। সূত্র জানায়, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের (এনআইসিভিডি) কার্ডিয়াক সার্জারি কমপক্ষে ১১ দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন আছে এরকম রোগীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা বেশির ভাগই নিম্ন-আয়ের মানুষ। অনেকে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এসেও আইসিইউ’র সাপোর্ট না পেয়ে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফেরত যাচ্ছেন। এজন্য জরুরি সার্জারিও হচ্ছে না।

চলতি সপ্তাহে জরুরি কার্ডিয়াক সার্জারির ওটি চালু হওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

 

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, এনআইসিভিডি’র সার্জারি ইউনিটে বেশির ভাগ শয্যা খালি। এদিকে বেশ কয়েকজন রোগী জানিয়েছেন, তারা তাদের সার্জারির জন্য অপেক্ষা করছেন। ৩৫ বছর বয়সী এক রোগী জানান, আমার একটি ভাল্ব ইমপ্ল্যান্ট দরকার। কিন্তু আমি জানি না এটি কখন করা হবে। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, বিষয়টি আইসিইউ’র চিকিৎসকদের ব্যাপার। তারা ভালো জানেন। এ ছাড়া তিনি বেশি মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাসপাতালটির আইসিইউ’র সামনে কর্তব্যরত আনসার জানান, আইসিইউ’র এসি নষ্ট। পুরো আইসিইউ ফাঁকা। একজন মাত্র রোগী আছেন। এই সময় কয়েকজন রোগীর স্বজনকে আইসিইউ’র বিষয়ে খোঁজ নিতে দেখা গেছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং এসির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লিউডি) মাঝে সমন্বয়ের অভাব চলমান অচলাবস্থাকে দীর্ঘায়িত করছে বলে একাধিক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তারা জানান, কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য দেশের প্রধান হাসপাতাল এনআইসিভিডিতে প্রতিদিন গড়ে ৫টি কার্ডিয়াক সার্জারি করা হয়। হাসপাতালটিতে ৮০০ শয্যার বিপরীতে প্রায় ১ হাজার ২০০ রোগী ভর্তি আছে। এখানে ২ আইসিইউতে মোট ৪৮টি শয্যা রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সার্জারির পর রোগীদের অন্তত ৩ থেকে ৭ দিনের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সর্বশেষ ১৮ই এপ্রিল এ ধরনের রোগীর ওটি হয়েছে। যাদের আইসিইউতে সাপোর্ট দরকার হয়। এরপর আইসিইউ’র এসি নষ্ট হয়ে পড়ে। মাঝখানে ঈদের ছুটিও ছিল। হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মনজুরুল আলম বলেন, এসি বিকল হয়ে যাওয়ায় আইসিইউতে তাপমাত্রার ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই ১৮ই এপ্রিল থেকে আমাদের সার্জারি বন্ধ রাখতে হয়েছে।

আইসিইউ কর্মীরা জানান, তারা মাসের শুরুতে এসি সিস্টেমে সমস্যা চিহ্নিত করেন এবং তা হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করেন। পরিচালক তখন পিডব্লিউডিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান। জবাবে পিডব্লিউডি আইসিইউ খালি করতে বলেছে। ঈদের ছুটি মাথায় রেখে আইসিইউ খালি করার কাজ শেষ করা হয়েছে। তবে ছুটি শেষ হওয়ার পর পিডব্লিউডি এখনো এসি সিস্টেম মেরামতে কাজ শুরু করতে পারেনি বলে সাংবাদিকদের জানান অধ্যাপক মনজুরুল। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত ঈদের ছুটির ৩ থেকে ৪ দিন আইসিইউকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করি। এর সঙ্গে আইসিইউ খালি করা ও সার্জারি স্থগিত রাখা, উভয়ই জড়িত। আমরা চেয়েছিলাম এ সময়ের মাঝেই মেরামতের কাজ শেষ হোক, কিন্তু এখন তা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এনআইসিভিডি’র পরিচালক ড. মীর জামাল উদ্দিন সার্জারি স্থগিতের পেছনে ৩টি কারণ তুলে ধরে বলেন, এসি সিস্টেম বিকল হয়ে পড়া, ঈদের ছুটিতে নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণের কাজ এবং পিডব্লিউডি’র বাড়তি সময় চাওয়া।

এ ব্যাপারে পিডব্লিউডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরণ মিস্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দল আজ সিস্টেমটি মেরামতের কাজ শুরু করবে এবং এটি ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। বিলম্বের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জোগাড় করা সম্ভব হয়নি।