এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স) শুধুই এই অঞ্চলের পথচারী ছিল না, বরং তারা এখানে দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করেছিল। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে ছিল এবং উন্নত প্রযুক্তিও ব্যবহার করেছিল।
এই গবেষণার ফলাফল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নাল প্রত্নতাত্ত্বিক এবং নৃতাত্ত্বিক বিজ্ঞান-এ প্রকাশিত হয় এবং বুধবার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডাব্লিউএএম-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলা খননকাজে পাওয়া নিদর্শনগুলো পরে বিশ্লেষণ ও তারিখ নির্ধারণ করে গবেষণা প্রকাশিত হয়।
এই ঐতিহাসিক আবিষ্কারের গুরুত্ব বিবেচনায় শারজাহর শাসক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য শেখ ড. সুলতান বিন মুহাম্মদ আল কাসিমি জেবেল ফায়া এলাকা সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জেবেল ফায়ায় আবিষ্কৃত সরঞ্জামগুলো কেবল সাধারণ পাথরের হাতিয়ার নয়।
এই হাতিয়ারগুলো পাওয়া গেছে সামুদ্রিক আইসোটোপ পর্যায় ৫এ (এমআইএস ৫এ) নামে পরিচিত একটি সময়ে, যখন ভারত মহাসাগর থেকে আগত বর্ষা আরব উপদ্বীপকে রুক্ষ মরুভূমি থেকে পরিণত করেছিল সবুজ তৃণভূমি, হ্রদ ও নদীতে। এই সময়ের জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে মানুষ এখানে সফলভাবে টিকে ছিল।
জেবেল ফায়ার খনন প্রকল্প পরিচালিত হয়েছে শারজাহ প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ-এর নেতৃত্বে, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে।
শারজাহ প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ-এর পরিচালক ঈসা ইউসুফ বলেন, ‘জেবেল ফায়ার আবিষ্কারগুলো দেখিয়ে দেয়, অভিযোজন, উদ্ভাবন ও স্থিতিস্থাপকতাই মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এসব হাতিয়ার শুধু প্রযুক্তির নিদর্শন নয়, এগুলো আমাদের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার গল্প বলে।’
এই ঐতিহাসিক আবিষ্কার শুধু প্রাচীন মানব ইতিহাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেনি, বরং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া