তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে ব্যস্ততা ও পরিসর বাড়বে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। আর এতে বাজার হারাতে পারে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো। নানামুখী সংকটে ধুকতে থাকা দেশীয় ৪টি এয়ারলাইন্সের এভিয়েশন খাতের নিয়ন্ত্রণ মাত্র ৩০ শতাংশ। সেটি কমে নামতে পারে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশে। এঅবস্থায় প্রতিযোগিতায় টিকতে সিভিল এভিয়েশনের অতিরিক্ত চার্জ থেকে রেহাই চায় দেশীয় এয়ারলাইন্স গুলো।
গেল ৩০ বছরে দেশের আকাশে ডানা মেলার অনুমতি পেয়েছিল ১১ টি বেসরকারি এয়ারলাইন্স। তবে এরই মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে ৮ টি। ১৯৯৫ সালে শুরু হওয়া বেসরকারি এয়ারলাইন্সের পথচলা মোটেও সুখকর ছিলোনা। জেট ফুয়েলের দাম, অ্যারোনটিক্যাল চার্জ, অতিরিক্ত সারচার্জ, যন্ত্রাংশ আমদানিতে জটিলতাসহ নানামুখী কারণে সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের এভিয়েশন খাত।
এমন সংকটের সময়ে দেশের এভিয়েশন খাতকে আশার আলো দেখাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। এই টার্মিনাল হলে যেমন বাড়বে যাত্রী সেবা দেবার সক্ষমতা তেমনি নতুন কার্গো ভিলেজের মাধ্যমে আমদানি রপ্তানিতে আসবে গতি।
বর্তমানে শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দরে বিদেশি ২৮টি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে। নানামুখী সংকটের মধ্যেও বিদেশি এয়ারলাইন্স গুলোর সাথে প্রতিযোগীতা করে টিকে আছে বাংলাদেশ বিমান, ৩ টি বেসরকারিসহ মোট ৪ টি দেশিয় এয়ারলাইন্স। যাদের হাতে রয়েছে দেশের এভিয়েশন খাতের মাত্র ৩০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ। এই ৪ টি এয়ারলাইন্সের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৭ টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ১১টি রুটে ইউএস বাংলা আর নভোএয়ার করে ১ টি রুটে। এই তিনটি এয়ারলাইন্স মিলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০-৫০ টির মতো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। আর ২৮ টি বিদেশি এয়ারলাইন্স পরিচালনা করে ১০০টির বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।
বলা হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল হলে ১৫০ থেকে ৪০০ তে উন্নীত হবে শাহজালাল বিমানবন্দরের ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা। সেক্ষেত্রে বিদেশি এয়ারলাইন্স গুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ফ্লাইট বাড়াতে হবে দেশিয় এয়ারলাইন্সকে। এবার প্রশ্ন হলো দেশিয় এয়ারলাইন্সগুলোর সেই সক্ষমতা কি আছে? নাকি বিদেশি এয়ারলাইন্সের চাপে কোন রকমে ধরে রাখা ৩০ শতাংশ বাজারের নিয়ন্ত্রনও্ হারাতে পারে দেশি এয়ারলাইন্সগুলো?
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিদেশী এয়ারলাইন্স আসলে আন্তর্জাতিক মার্কেটে দেশিয় এয়ারলাইন্সের শেয়ার কমে যাবে। দেশিয় এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা বাড়ানো না গেলে বাজার হারানোর শঙ্কা এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম জানান, পোর্টের সাথে বাড়াতে হবে দেশিয় এয়ারলাইন্সের ক্যাপাসিটি। বিদেশি এয়ারলাইন্সের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সিভিল এভিয়েশনের অতিরিক্ত চার্জ প্রত্যাহারের দাবি দেশিয় এয়ারলাইন্স গুলোর। সবঠিক থাকলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ২০২৪ সালের এপ্রিলে পুরোপুরি সেবা দিতে পারবে নতুন এই টার্মিনাল ।