ঢাকামঙ্গলবার , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

ডিজিটালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়, তবু সূচকে

অনলাইন ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪ ১:৫২ অপরাহ্ণ । ৫৭ জন

ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে সাড়ে ১৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। তবু ডিজিটাল সেবা, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্নীতি কমানো, মানবসম্পদ ও দক্ষতা উন্নয়ন, আইসিটি সেবা রপ্তানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

আইসিটি বিভাগের হিসাবে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভাগটি ৫৩টি প্রকল্প ও ৩৪টি কর্মসূচি নিয়েছে। যার মধ্যে ২২টি প্রকল্প এখনো চলমান। বাকিগুলো বাস্তবায়ন শেষ। সব মিলিয়ে ব্যয় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ডিজিটালাইজেশন-সংক্রান্ত প্রকল্প নিয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তা ও খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আইসিটি খাতে অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যেগুলোর তেমন কোনো সুফল নেই। সম্ভাবনার নামে ‘গালগল্প’ শুনিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। তারপর দেখা গেছে, সেই অবকাঠামো তেমন কোনো কাজে লাগছে না। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। প্রশিক্ষণের নামে শত শত কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তাতেও সুফল কম।

আইসিটি বিভাগের প্রকল্পগুলোয় অতিরিক্ত ব্যয় ধরা, ঘনিষ্ঠ লোকদের কাজ দেওয়া, চাকরিতে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক ও তাঁর কাছের লোকদের যখনই কোনো কিছু মাথায় আসত, তাঁরা সেটাকে প্রকল্প বানিয়ে ফেলতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম দিয়ে নেওয়া হয়েছিল ১১টি প্রকল্প। প্রশ্নহীনভাবে প্রকল্প অনুমোদন করাতে এই কৌশল নেওয়া হতো।

আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে সবকিছুর মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা। বেশির ভাগ সময় বিদেশে থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করতেন।

২০২২ সালের ডিসেম্বের সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, ১৩ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামেও বর্তমানে ডিজিটাল সেন্টার থেকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনেক দেশ বাংলাদেশের মতো ডিজিটাল দেশ গঠনের স্লোগান দেয়নি, এত বিপুল ব্যয়ও করেনি। তারা বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই) ২০২৪–এ ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। এ সূচকে ভারত (৯৭), শ্রীলঙ্কা (৯৮) ও মালদ্বীপ (৯৪) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। পিছিয়ে পাকিস্তান (১৩৬)। অনলাইন সেবা, টেলিকম অবকাঠামো ও দক্ষ মানবসম্পদ—এই তিন মাপকাঠি বিবেচনায় সূচকটি তৈরি করে জাতিসংঘ।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) চলতি বছরের জুনে আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (আইডিআই) ২০২৪ প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ৩৯ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম ও ভুটান এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। পাকিস্তান কিছুটা পিছিয়ে। সূচকে ভারতের তথ্য নেই।

জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই) ২০২৪–এ ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। এ সূচকে ভারত (৯৭), শ্রীলঙ্কা (৯৮) ও মালদ্বীপ (৯৪) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। পিছিয়ে পাকিস্তান (১৩৬)। অনলাইন সেবা, টেলিকম অবকাঠামো ও দক্ষ মানবসম্পদ—এই তিন মাপকাঠি বিবেচনায় সূচকটি তৈরি করে জাতিসংঘ।

বিশ্বব্যাংকের ‘ডিজিটাল অগ্রগতি ও প্রবণতা প্রতিবেদন ২০২৩’ বলছে, বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর হার প্রায় ৫২ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম।

ইন্টারনেটের গতি, ডিজিটাল জীবনমান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার ও ফ্রিল্যান্সিংয়েও সমপর্যায়ের অর্থনীতির দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) পর্যালোচনা সভায় ৩ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি খাতে মোট ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সূচক দেখলে বোঝা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণ পাননি। বরং এ ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।

 

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের রূপকল্প ঘোষণা করে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া শুরু হয়।

আইসিটি বিভাগে উল্লেখযোগ্য সময় মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন (৫ ডিসেম্বর, ২০১১-২৩ জুলাই, ২০১২), মোস্তফা ফারুক মোহাম্মেদ (১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২-১২ জানুয়ারি, ২০১৪) এবং আবদুল লতিফ সিদ্দিকী (১২ জানুয়ারি, ২০১৪-১২ অক্টোবর, ২০১৪)।

২০১৪ সাল থেকে টানা ১০ বছরের বেশি সময় আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন জুনাইদ আহ্‌মেদ। তাঁর বিরুদ্ধেই যথেচ্ছ প্রকল্প নেওয়া এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ বেশি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।

আওয়ামী লীগ গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ঘোষিত ইশতেহারে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের রূপকল্প ঘোষণা করে। যদিও তখন প্রশ্ন উঠেছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণ না করে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করার স্লোগান দেওয়া কেন।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জুনাইদ আহ্‌মেদ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জনে সরকার শতভাগ সফল। সরকারি সেবাগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। করোনা মহামারিতে পুরো ব্যবস্থা অনলাইনে চালু ছিল।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নতি হয়েছে। সরকারি সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু সেটা সব দেশেই হয়েছে। বাংলাদেশ কি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যেতে পেরেছে, এ প্রশ্নের উত্তর হলো ‘না’।

দেশীয় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ডেটাসফট সিস্টেমসের প্রেসিডেন্ট এম মনজুর মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম আমলে ভালো কিছু কাজের উদ্যোগ ছিল। কিন্তু পরের ১০ বছরে লুটপাট হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত সরকার শুধু অবকাঠামো করেছে। কোনো প্রকল্প বা উদ্যোগ গ্রহণের আগে আইসিটি খাতের অংশীদারদের পরামর্শ নেওয়া হতো না।

 

আওয়ামী লীগ সরকার জেলায় জেলায় ‘হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের কথা বলে। দক্ষতা উন্নয়নে তৈরি করা হয় ‘ইনকিউবেশন সেন্টার’। ৯২টি এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণের কথা ছিল। এর মধ্যে ৩টি হাইটেক পার্ক, ৩টি সফটওয়্যার পার্ক এবং ৪টি ইনকিউবেশন সেন্টার চালু রয়েছে। অনেকগুলো নির্মণাধীন। নির্মাণ শেষ হওয়া ও নির্মাণাধীন প্রকল্পে মোট ব্যয় ৮ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা।

হাইটেক পার্কগুলোয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ইনকিউবেশন সেন্টারগুলো তেমন কাজে লাগছে না। যেমন যশোরে ৩০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এটির উদ্বোধন করা হয়। তার আগে জুনাইদ আহ্‌মেদ গণমাধ্যমে বলেছিলেন, যশোর হাইটেক পার্ক হবে বাংলাদেশের ‘সিলিকন ভ্যালি’। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি বহু প্রযুক্তি কোম্পানির আঁতুড়ঘর। গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সেটি অদ্বিতীয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম রোকনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এসব ভবন থেকে জাতি কী পেল? তাঁর মতে, এসব প্রকল্পে ঋণদাতাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পর তারা মূল্যায়ন করেছে কি না, সে প্রশ্ন সামনে আসা উচিত। পরামর্শকদেরও প্রশ্ন করা উচিত, কী বুঝে এমন অবকাঠামো তৈরি হলো।

ইউনিয়ন পর্যায়ে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছাতে আইসিটি বিভাগের সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ইনফো সরকার ১, ২ ও ৩ নামে ২০১০ থেকে ২০২৩ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মেয়াদে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। মোট ব্যয় হয় ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এরপর ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন (ইডিসি) নামে ৫ হাজার ৯২৩ কোটি টাকার আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে আইসিটি অধিদপ্তর থেকে। যে প্রকল্পের অন্যতম কাজ ইউনিয়ন এবং গ্রামপর্যায়ে ব্যবহারকারী পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা।

 

আইসিটি বিভাগের প্রকল্পগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১১টি প্রকল্প ও ১৫টি কর্মসূচি ছিল প্রশিক্ষণসংক্রান্ত। ২০০৯ সাল থেকে এসব প্রকল্পে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, ভাষা প্রশিক্ষণ, সাইবার প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি নামে বছর বছর প্রকল্প চলত।

অভিযোগ রয়েছে, প্রশিক্ষণের কাজ দেওয়া হতো সরকারের ঘনিষ্ঠদের। নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ দিয়ে তারা মূলত টাকা আত্মসাৎ করত। যেমন ২০১৪ সালে ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ নামের একটি প্রকল্প নেয় আইসিটি বিভাগ, যা শেষ হয় ২০২৩ সালে। মোট ব্যয় হয় ৩২০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ২০২০ সালে একটি নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন দেয়। সেখানে বলা হয়, ফ্রিল্যান্সার তৈরির জন্য নেওয়া এই প্রশিক্ষণে মেয়াদ যথেষ্ট নয় এবং দক্ষ প্রশিক্ষক দরকার। আইসিটিভিত্তিক প্রদত্ত প্রশিক্ষণের জন্য অপরিহার্য উপাদান ল্যাপটপ ও কম্পিউটার, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ–সুবিধার ঘাটতি ছিল।

আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেমস, অ্যাপস তৈরি ও প্রশিক্ষক তৈরির জন্য ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তিনটি আলাদা কর্মসূচি ছিল, যার ব্যয় ছিল প্রায় ২৪ কোটি টাকা। এরপর ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে একই কাজের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয়, যা চলমান আছে। কর্মসূচির আওতায় বানানো ৬০০টি অ্যাপের একটিও কোনো কাজে আসেনি।

অনেক সময় একই কাজের জন্য একাধিক প্রকল্প নেওয়া হতো। যেমন স্টার্টআপদের (নতুন প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবসায়িক উদ্যোগ) সহায়তা করতে আইডিয়া নামের একটি ১০ বছরের প্রকল্প রয়েছে। আবার আইডিয়ার মতো একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা বলে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ নামে ৩৫৩ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প চলছে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠন বেসিসের সাবেক সহসভাপতি ফারহানা এ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৫ বছরে আইসিটি খাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দলীয় কিছু প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তির উন্নতি হয়েছে। খাতটি প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোতে পারেনি। তিনি বলেন, আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) ডলার রপ্তানি আয়ের গল্প শোনানো হয়েছিল, তা ১ বিলিয়নও নেওয়া যায়নি।