ঢাকাসোমবার , ৩ এপ্রিল ২০২৩
  • অন্যান্য

ব্যাংকঋণের স্মার্ট পদ্ধতিতে সুদহা

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ৩, ২০২৩ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ । ৬২ জন
ছবি: সংগৃহীত

ব্যাংকঋণের নয় শতাংশ সুদহার তুলে দিয়ে আগামী জুলাই থেকে নতুন পদ্ধতিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শর্টটার্ম মান্থলি অ্যাভারেজ রেট’ বা স্মার্ট। এ ব্যবস্থায় ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণ হবে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে। ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করা যাবে, যা হবে করিডর রেট। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ নিয়ে আলোচনার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভোক্তা ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার কত হবে, তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এছাড়া এখন থেকে আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির মূল্যও যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদসহ সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকার্স সভায় মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ঋণের ব্যাংকঋণের।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের অন্যতম হলো সুদহার নির্দিষ্ট করে না রেখে করিডর প্রথা চালু করে তা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হারের সঙ্গে ৩ শতাংশ যুক্ত করে যে সুদ হয়, তা নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ৬ দশমিক ৯৯। ফলে এখনকার হিসাবে ঋণের সুদ হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।

 

সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, প্রতি মাসে ট্রেজারি বিলের একাধিকবার নিলাম হয়। ফলে এর সুদের হারের ওপর ভিত্তি করে একটা গড় হার নির্ধারণ করা হবে। যদি ট্রেজারি বিলের সুদহার কমে যায়, তবে অতিরিক্ত হার বাড়িয়ে সুদের হার বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি মাসে গড় সুদহার কত হবে, তা নির্ধারণ করে জানিয়ে দেবে। পাশাপাশি ছয় মাস মেয়াদি গড় সুদহারও জানাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী জুনে যে মুদ্রানীতি দেওয়া হবে, তাতে এ নিয়ে বিস্তারিত ঘোষণা থাকবে। এটি কার্যকর হবে জুলাই থেকে।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগে যে পণ্য আনতে সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছিল, এখন সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার দিয়েই এসব পণ্যের ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে। আমদানি পণ্যের মূল্য পরীক্ষা করায় ডলার খরচ কমে আসছে। বেশি ডলার খরচ করে পণ্য আনা কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ৩০ লাখ ডলারের বেশি ঋণপত্রের মূল্য যাচাই করে অনুমোদন দিচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ঋণপত্রের মূল্য আগের চেয়ে বেশি যাচাই-বাছাই করছে। অপ্রয়োজনীয় আমদানির অনুমোদন দিচ্ছে না। ফলে ঋণপত্র খোলা কমে গেছে।

সভায় দেশ থেকে যেসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, তার সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে কিনা, তা তদারকি শুরু করার সিদ্ধান্তের কথাও জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, এতে রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার কমে আসবে। ফলে প্রবাসী আয়ে যে হুন্ডি প্রথা আছে, তা-ও কমে আসবে।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, হুন্ডির চাহিদা কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এতেই অতিরিক্ত ডলার খরচ কমে আসবে। পাশাপাশি সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে কাজ হচ্ছে, যা আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে।