উত্তরাঞ্চলের একসময়ের প্রমত্তা নদী করতোয়া এখন যেন মৃতপ্রায়। বেশির ভাগ স্থানেই কোনো পানি নেই। বগুড়া জেলার প্রবেশমুখ শিবগঞ্জ উপজেলার পলাশী পয়েন্ট থেকে মহাস্থান সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৫ কিলোমিটার নদীর বুকের বেশির ভাগ স্থানেই চলছে চাষাবাদ। কোথাও তৈরি করা হয়েছে বীজতলা, কোথাও রোপণ করা হয়েছে বোরো ধান, আবার কোনো কোনো এলাকায় রয়েছে আলুর ক্ষেত।
শিবগঞ্জ উপজেলা অংশের ৩৫ কিলোমিটার এলাকার তথ্য নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে নদীর ১০টি পয়েন্টে কিছুটা পানির অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে গুজিয়া, সাদুল্যাপুর, দেওয়ানতলা, আমতলী, শিবগঞ্জ হাটের পূর্বপাশ, উপজেলা সদরের চিকাদহ, পৌরসভার পেছনের অর্জনপুর, পার আচলাই, মহাস্থানের গোবিন্দভিটা ও শিলাদেবীর ঘাটে পানি আছে। এই ১০ পয়েন্টে পানির অস্তিত্ব থাকলেও তা প্রবহমান নয়। এসব স্থানে নদীর গভীরতা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ডোবার আকৃতি ধারণ করে পানির দেখা মিলছে। এ ছাড়া অন্য এলাকায় পানি একেবারে নেই বললেই চলে।
যোগাযোগ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড শিবগঞ্জ পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) শাখার কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পর্যন্ত ১২৩ কিলোমিটার করতোয়া নদীর অবস্থাই করুণ। যেহেতু শিবগঞ্জ উপজেলার পাশেই রেগুলেটর নির্মাণ করা হয়েছে, এ কারণে প্রভাবটা শিবগঞ্জে বেশি। করতোয়ার প্রাণ ফেরাতে দুই হাজার ৯৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘স্মার্ট করতোয়া রিভার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে যে প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে, সেটি পুরো অনুমোদন হলে করতোয়া আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, ওই প্রকল্পের মধ্যে বগুড়া শহর অংশের ১৭ কিলোমিটারকে উন্নয়নের আওতায় নিয়ে তা অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। অবশিষ্ট অংশ অনুমোদিত হলে ১২৩ কিলোমিটার নদীর বুকে আর চাষাবাদ করার কোনো সুযোগ থাকবে না।