ঢাকারবিবার , ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • অন্যান্য

বগুড়ার অসুস্থ্য প্রতিবন্ধী নাজমুল বাঁচতে চায়!

স্টাফ রিপোর্টার
অক্টোবর ৮, ২০২৩ ১২:১৬ অপরাহ্ণ । ৫৫ জন

বগুড়া মালতীনগর দক্ষিন পাড়ার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম। বয়স মাত্র ত্রিশ বছর। এক সময় এই যুবক ছিলো টগবগে ও র্দুরন্ত। শিক্ষত এই ব্যক্তি তার পুরো এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। করতেন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী। সংসার জীবনে তিনি বিবাহিত। ঘরে আছে তার মা আর এক সন্তান সব মিলে তার সংসার ভালই কাটছিলো।

কিন্তু দু:খের বিষয় ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় বর্তমানে তিনি এখন প্রতিবন্ধী। অন্যের সাহয্য ছাড়া স্বাভাবিক চলা ফেরা পর্যন্ত করতে পারে না। এই অবস্থায় মানবেত ভাবে জীবন যাপন করছেন নাজমুল। অর্থ অভাবে একমাত্র সন্তানকে পড়ালেখা থেকে বিরত রাখতে বাধ্য হন। দুই বছর পর এক নারীর সাহায্যে আবারো পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করে দিয়েছে।

নাজমুলের বাবা ডাঃ খাদেম আলী। চাকুরি করতেন প্রাণীসম্পদ বিভাগে। গত ছয় বছর আগে তার বাবা হঠাৎ মারা যায়। এর পরই বিপত্তি ঘটে তাদের সংসারে। পুরো সংসারের দায়িত্ব পড়ে নাজমুল ইসলামের উপর।

২০১৯ সালে নাজমুলের শরীরের মলদ্বারে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। সেখানে অপারেশন করার পর ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার স্বীকার হন তিনি। মলদ্বারে বড় ধরনের ইনফেকশন হয়। মলদ্বার ২ ইঞ্চি গর্ত হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। তার মা নার্গিস বেগম বলেন,ছেলেকে সুস্থ করতে অনেক চিকিৎসা করেছি।

যা সঞ্চয় সম্বল ছিল সবকিছুই চিকিৎসার খরচ যোগাতে শেষ হয়ে গেছে। তার বাবা যদি বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো আজ আমরা এই পরিস্থিতির শিকার হতাম না, আমাদের জীবনে অমাবস্যার মত কালো রাত্রি নেমে আসতো না। তার ছেলের নিয়মিত ওষুধ পত্র কিনতেই হিমসিম হয়ে উঠছেন। পাশা পাশি চার সদস্যের এই সংসারের খাদ্য বস্ত তো আছেই। সন্তানের সু-চিকিৎসায় তিনি সমাজের বিত্তবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন।

নাজমুল ইসলাম জানান,ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় তিনি সর্বস্ব হারিয়েছেন অপরদিকে গত ২০২১ সালে ৩ এপ্রিল বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে ফুলতলায় সিএনজি চালিত অটোরিক্্রা র্দূঘটনায় মারাক্ত ভাবে আহত হন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়া হয়।
তবুও তিনি সুস্থ হননি। বর্তমানে তিনি অন্যের সাহায্যে চলা ফেরা করেন।

এ বিষয়ে নাজমুলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, পায়ে রড দেয়া আছে আমার পা ছোট বড় হয়ে গেছে,আমি অন্যের সাহায্য বা লাঠি ছাড়া চলা-ফেরা করতে পারিনা।
আমার চোখ জটিল রোগে আক্রান্ত,চোখে পানি তৈরি হয়না, মনি ছিড়ে গেছে,কর্নিয়া আলসারে আক্রান্ত, আমার কানও জটিল রোগে আক্রান্ত। আমার দেহ যেন রোগের এক বাসস্থান!

অসুস্থস্থার জন্য আমি প্রতিবন্ধী হয়ে গেছি। তিন বছর যাবত কোন কর্ম করতে পারি না। চিকিৎসার খরচ যোগাতে আমি এবং আমার পরিবার ঋণে জর্জরিত, আমার অনেক টাকা ঋন হয়েছে। আমার বসত ভিটা একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে বন্ধক রয়েছে। নিজের বলতে আর কিছুই নেই, আমার প্রায় ২৮ লাখ টাকা ঋন। প্রতিনিয়তই ঋনের টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংক এবং অন্যন্যা পাওনাদারা আমাকে অমানবিক অত্যাচার করছে। পাওনাদাররা প্রায় আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে আসে। এখন পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার কোন পথই নেই।

নাজমুল প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বৃত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। আমি আমার পরিবারকে নিয়ে বাঁচতে চাই। আমার ছেলেকে আমি উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে একজন মানবদরদি হিসেবে গড়তে চাই। যাতে বড় হয়ে অভাবি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।