ঢাকাশনিবার , ৬ মে ২০২৩
  • অন্যান্য

ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
মে ৬, ২০২৩ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ । ৫৪ জন
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের দুটি ভূমিকম্পের ধরনের সঙ্গে প্রায় ২১১ বছর আগে হওয়া ভূমিকম্পের একটি মিল আছে। ১৮১২ সালের এপ্রিল ও মে মাসে ঢাকার আশপাশে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্প ঠিক কত মাত্রার ছিল, তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও এতে ঢাকার দুটি এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়। যেসব এলাকার ভূ-অভ্যন্তরে চ্যুতি বা ফাটল থাকে, সেখানে প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ বছর পরপর মাঝারি থেকে তীব্র ভূমিকম্প হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই হিসাবে ঢাকার আশপাশে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে—এমন ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টা ৫৭ মিনিটে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। এর উৎপত্তিস্থল ঢাকার দোহার থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে-দক্ষিণ-পূর্বে। ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পের সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি হয়। অনেকে ভোরে ঘর থেকে বের হয়ে যান। তবে এখন পর্যন্ত এতে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। ওই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূগর্ভের প্রায় ১৭ কিলোমিটার নিচে হওয়ায় নগরবাসী তা খুব বেশি বুঝতে পারেনি। সাধারণত, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল যত গভীরে হয়, কম্পনের অনুভূতি তত কম হয়। আর কেন্দ্রস্থল ওপরের দিকে হলে কম্পনের অনুভূতি বেশি হয়।

গত এক যুগে ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় ছয়টি ভূমিকম্প হয়েছিল। এরপরের বছরগুলোতে ভূমিকম্পগুলোর কেন্দ্রস্থল ছিল মূলত সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার মধ্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকার আশপাশে বেশি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাওয়া ভূ-অভ্যন্তরের বার্মা প্লেটের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেট চাপা পড়ে যাচ্ছে। যে কারণে সেখানে প্রচুর শক্তি জমা হচ্ছে। ওই শক্তি যেকোনো সময় বের হয়ে শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ভূমিকম্প মোকাবিলায় থেমে থাকা কাজ আমাদের এখনই দ্রুত শুরু করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের হিসাবে, গত ৪৮৫ বছরে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে ও ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৫২টি মৃদু, মাঝারি ও তীব্র মাত্রায় ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে মাত্র ছয়টি ভূমিকম্প হয়েছিল ঢাকা ও এর আশপাশে। গত এক যুগেই ঢাকার আশপাশে মোট আটটি ভূমিকম্প হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী ও দোহারে। এর আগের ভূমিকম্পের বেশির ভাগ কেন্দ্রস্থল ছিল সিলেট ও চট্টগ্রাম এলাকায়।

 

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। ওই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূগর্ভের প্রায় ১৭ কিলোমিটার নিচে হওয়ায় নগরবাসী তা খুব বেশি বুঝতে পারেনি। সাধারণত, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল যত গভীরে হয়, কম্পনের অনুভূতি তত কম হয়। আর কেন্দ্রস্থল ওপরের দিকে হলে কম্পনের অনুভূতি বেশি হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের হিসাবে, ‘গত এক যুগে ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় ছয়টি ভূমিকম্প হয়েছিল। এরপরের বছরগুলোতে ভূমিকম্পগুলোর কেন্দ্রস্থল ছিল মূলত সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার মধ্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকার আশপাশে বেশি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাওয়া ভূ-অভ্যন্তরের বার্মা প্লেটের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেট চাপা পড়ে যাচ্ছে। যে কারণে সেখানে প্রচুর শক্তি জমা হচ্ছে। ওই শক্তি যেকোনো সময় বের হয়ে শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ভূমিকম্প মোকাবিলায় থেমে থাকা কাজ আমাদের এখনই দ্রুত শুরু করতে হবে।’

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের হিসাবে, গত এক মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মোট ১৪টি মৃদু থেকে মাঝারি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছে দুটি। যার একটি গত ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে, রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রায়। আর সর্বশেষটি গতকাল ভোরে ঢাকার ১৪ কিলোমিটার দূরে দোহারের কাছে, ৪ দশমিক ৩ মাত্রার।