ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ মার্চ ২০২৪
  • অন্যান্য

কড়াইল বস্তির গাড়িতে নেই খাসির মাংস ও ডিম

অনলাইন ডেস্ক
মার্চ ১৪, ২০২৪ ২:০৭ অপরাহ্ণ । ২৫ জন

রমজান উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুলভ মূল্যে মাংস, ডিম ও দুধ বিক্রির যে গাড়ি বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় গিয়েছে, সেই গাড়িতে খাসির মাংস ও ডিম বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সকাল ১০টায় বিক্রি শুরুর কথা থাকলেও শুরু হয়েছে ঘণ্টাখানেক পরে ১১টার দিকে।

সুলভ মূল্যে মাংস, দুধ ও ডিম বিক্রির পঞ্চম দিন আজ বৃহস্পতিবার সকালে বনানীর কড়াইল বস্তির আনসার ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। গাড়ি পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় অনেক সকাল থেকে অপেক্ষার পর কাজে চলে গেছেন বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্রি শুরু হয় বেলা ১১টার কিছু পরে। শুরু থেকেই তেমন ভিড় ছিল না। মানুষ কম থাকায় পণ্য কিনতে যাওয়া লোকজনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতেও হয়নি। দায়িত্বে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধির সামনে জটলা পাকিয়েই চলছিল টাকা দিয়ে স্লিপ সংগ্রহের কাজ। স্লিপ নেওয়ার পরে সামান্য দূরে দাঁড় করানো ফ্রিজার ভ্যান থেকে পণ্য বুঝে নিচ্ছিলেন ক্রেতারা।

কড়ালই বস্তি এলাকায় যাওয়া ওই গাড়িতে আজ ১২০ কেজি গরুর মাংস, ৪০ কেজি ড্রেসড ব্রয়লার এবং ১৬০ লিটার দুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাসির মাংস আর ডিম দেওয়া হয়নি।

গরুর মাংস কিনতে পেলেও ডিম না পেয়ে ক্রেতাদের কেউ কেউ হতাশ হন। পর পর দুই দিন লাইনে দাঁড়িয়েও ডিম কিনতে পারেননি বস্তির আনসার ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা মারুফা বেগম। তিনি গতকাল বুধবারও পণ্য কেনার লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু দুপুর ১২টার মধ্যে দুধ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই কিনতে পারেননি।

মারুফা বেগম বলেন, দুই দিন পণ্য কেনার জন্য এলাম, একদিনও ডিম পেলাম না। আজকে তিনি এক কেজি গরুর মাংস ও দুই লিটার দুধ কিনেছেন বলেও জানান।

আনসার ক্যাম্পেরই বাসিন্দা কুলসুম বিবিও ডিম কিনতে চেয়েছিলেন বলে জানালেন৷ তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল ডিম কিনমু। কিন্তু তারা তো আজকে ডিম আনেই নাই। গরিবের তো ডিমও দরকার।’

বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় বিক্রির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধি আজহার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘খাসি কম পড়ে গেছে। আর ডিমের গাড়ি আসতে পারেনি বলে জেনেছি। তবে আমাদের দুধ বেশি দেওয়া হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের উপপ্রকল্প পরিচালক শাহ আলম বিশ্বাসের কাছে ডিম ও খাসির মাংস না দেওয়া নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কড়াইলের গাড়িতে খাসির মাংস ও ডিম না দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান।

শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, গাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিও তাঁকে কিছু জানাননি। তাই কেন নেই, এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। তবে বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে তিনি জানাবেন।

খাসির মাংস কিংবা ডিম কিনতে না পারলেও গরুর মাংস বাজারের চেয়ে কম দামে কিনতে পেরে স্বস্তির কথা জানান অনেকেই। আনসার ক্যাম্পের বাসিন্দা খোকন মিয়া বলেন, আজকে প্রথম এখান থেকে কিনলাম। যাঁরা আগে কিনেছেন, তাঁরা ভালো বললেন। আর বাজারে থেকে ১৫০ টাকা কম দামে ৬০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর মোট ৩০টি স্থানে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ২৫টি এবং স্থায়ী বাজার ৫টি। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রগুলো হলো নতুন বাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বছিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।

আর স্থায়ী বাজার হলো মিরপুর শাহ আলী বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর ও কাজী আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।