ঢাকাসোমবার , ১ এপ্রিল ২০২৪
  • অন্যান্য

ঈদের বাজার ফুটপাতে দরদামের কেনাকাটা

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ১, ২০২৪ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ । ২৪ জন

নীল রঙের জামাটি ভারি পছন্দ হয়েছে সাহেল আহমেদের। বিশেষ করে গলার সুতার কাজটি। কিন্তু দোকানি দাম কমাচ্ছিলেন না তেমন। ৭০০ টাকা বেঁধে দিয়ে সেখানেই অনড়।
 

শেষ পর্যন্ত ‘আপনার কথাও থাক, আমার কথাও থাক’ বলে সমঝোতায় এলেন ক্রেতা। এগিয়ে দিলেন সাড়ে ছয় শ টাকা। বিক্রেতা এবার ব্যাগে ভরে দিলেন জামাটি। গতকাল নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাতের ঈদের কেনাকাটার দৃশ্য এটি।
বড়-ছোট নানা মাপের ও মানের বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের ঈদের বাজারও জমে গেছে। ফুটপাতের পণ্যের ক্রেতা একেবারে নিচের আয়স্তর থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত পর্যন্ত। সেখানেও শোনা গেল দাম নিয়ে অনুযোগ। সাহেল আহমেদ মিরপুর থেকে এসেছিলেন ঈদের কেনাকাটা করতে।
কালের কণ্ঠকে জানালেন, বিপণিবিতানে দুই ঘণ্টা ঘুরেও কিছুই কিনতে পারেননি। পছন্দ হলেও দামে মেলাতে না পেরে ফুটপাতে এসেছেন।  সেখানেও ছোট বোনের জন্য ‘ওয়ান পিস’ জামা কিনতে তাঁর সাড়ে ছয় শ টাকা চলে গেল। এর সঙ্গে মিলিয়ে পাজামা ও ওড়না কিনতে হবে। সব মিলিয়ে বাজেট থেকে কয়েক শ টাকা বেশি গুনতে হবে।
রমজানের কুড়িতম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন ফুটপাত ছিল মৌসুমি পোশাক বিক্রেতাদের দখলে। এসব দোকানে ঈদের জন্য ওঠা সব ধরনের পোশাকই রয়েছে। মানে যাই হোক, অন্তত নকশায় ও রঙে সেসব পোশাক আকর্ষণীয়ও বেশ। তুলনায় কমদামে কেনা যায় বলে নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্রেতার ভিড়ও মন্দ নয়। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এবার এখনো গতবারের মতো বিক্রি জমেনি। প্রচুর ক্রেতা আসছেন ঠিকই, কিন্তু পছন্দ হলেও দাম শুনেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন অনেকে। অন্যদিকে ক্রেতাদের বক্তব্য, এবার প্রতিটি পোশাকে কমপক্ষে দুই থেকে তিন শ টাকা বেশি মূল্য রাখা হচ্ছে। ফুটপাতের হিসাবে এই ব্যবধানটা বড়ই।সাহেল আহমেদের মতে, গত বছরও বোনের জন্য তিনি নিউ মার্কেট থেকে একই ধরনের জামা কিনেছেন সাড়ে চার শ টাকায়। নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক ও মৌচাক মার্কেটের আশপাশের ফুটপাতের দোকানে ছিল প্রচুর মানুষের ভিড়। আশপাশের জনপ্রিয় বিপণিবিতানগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দামদর আর কেনাকাটা হয়েছে সেখানে।

রামপুরা থেকে মৌচাকে এসেছিলেন রাবেয়া ও তাঁর ছোট বোন রোদসী। দুজনই শিক্ষার্থী। ঈদের জন্য পোশাক, প্রসাধনী ও সাজসজ্জার জিনিসপাতি কেনার পরিকল্পনা তাঁদের। রাবেয়া বললেন, বিপণিবিতানে দুই ঘণ্টা ঘুরেছেন তাঁরা। তারপর ফুটপাত থেকেও একই নকশার দুটি জামা কিনেছেন। তাঁরাও বললেন, এবার পোশাকের বাজার বেশ চড়া।

মৌচাকের আয়শা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে পোলো ও টি-শার্ট বিক্রয় করছিলেন সাইদুল ইসলাম। এক দরের নোটিশ টানিয়ে প্রতিটি পোলো শার্ট ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। কালের কণ্ঠকে সাইদুল বলেন, ফুটপাতে কেনাকাটা করতে এসে ক্রেতারা দামদর করতেই থাকেন। এবার পোশাকের দাম বেশি। একটি পোলো শার্ট কোনোভাবেই ৩০০ টাকার কমে বেচা সম্ভব নয়। তাই বেশি কথা ও ঝামেলা এড়াতে একদরের নোটিশ টাঙিয়েছেন। তার পরও ক্রেতারা দামাদামি করছেন।

শাহজাদপুরের ব্যস্ত সুবাস্তু নজরভ্যালী শপিং মলের বাইরেও ফুটপাতের বাজার বেশ জমজমাট। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে পোশাক-আশাক, জুতা ও সাজসজ্জার উপকরণ। প্রতিবছরই এই ফুটপাতে ব্যবসা করেন মানিক মিয়া। কালের কণ্ঠকে তিনি বললেন, এবার এখনো ব্যবসা জমেনি। গত শুক্র ও শনিবার কিছু ব্যবসা হয়েছে। তবে লোকজন বেতন-ভাতা পেলে দু-এক দিনের ভেতরই জোরসে কেনাকাটা শুরু হবে বলে তাঁর আশা।