বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ঈদ উদ্যাপন করেছেন। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার কিছুটা ব্যতিক্রম ঈদ কাটিয়েছেন এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমান সিঁথি ও দুই নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান তার সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেন। লন্ডনে থাকা বড় ছেলে তারেক রহমানের পরিবারের সঙ্গে ঈদের দিন সকালেই মোবাইল ফোনে কুশল বিনিময় করেন বেগম খালেদা জিয়া। তার বাসভবন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ঈদের দিন সকালে বোন সেলিমা ইসলাম ও ভাই শামীম ইস্কান্দার ফিরোজা’য় আসেন। তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সারাদিন বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গেই সময় কাটান।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। বিরোধী দলের নেত্রী থাকাকালীন সময়েও একইভাবে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। তবে ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চারটি ঈদ কারাগারে কাটিয়েছেন তিনি।
যদিও সে সময় ঈদের দিন ফুল, মিষ্টি ও রান্না করা বিভিন্ন প্রকারের খাবার নিয়ে পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতেন। ২০২০ সাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন তিনি।
এদিকে ঈদের দিন সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপাসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাসভবন ফিরোজায় সাক্ষাৎ করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান। ফিরোজা’র দোতলায় ‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে’ প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী দলীয় প্রধানের সঙ্গে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) এখনো বেশ অসুস্থ, এখনো তার চিকিৎসা চলছে। ডাক্তাররা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। ঈদের দিন বেগম খালেদা জিয়া কী বার্তা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বার্তা হচ্ছে এটা যে, দেশবাসী যেন ভালো থাকে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণ যেভাবে কাজ করছে বেগম খালেদা জিয়া সেটি অব্যাহত রাখতে বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি আপনাদের (সাংবাদিকদের) ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সৌজন্য এই সাক্ষাতে বেগম খালেদা জিয়া আমাদের কুশল জানতে চেয়েছেন এবং সমগ্র দলের যারা কারাগারে আছেন তাদের সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের যে কষ্ট সে সম্পর্কে তিনি অবহিত আছেন। দেশের হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা সেগুলো সম্পর্কেও তিনি অবগত আছেন। ফখরুল বলেন, যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, অর্থনীতির অবস্থা যে দিন দিন খারাপ হচ্ছে সেই বিষয়গুলো তিনি অবহিত আছেন। একই সঙ্গে আবহাওয়া যে প্রচণ্ড দাবদাহ গেল এ বিষয়টাও উল্লেখ করে তিনি (খালেদা জিয়া) তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈশ্বিক জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে তা নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ আমাদের অনেক সীমিত ছিল। তিনি বাসায় আসার পরে এই ঈদের দিনগুলোতে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাই। আমাদের সঙ্গে আলোচনা অনেকদিন পর, সেজন্য সবাই কিছুটা আবেগাপ্লুত ছিলাম। আমরা আশা করি যে, খুব শিগগিরই তার সঙ্গে আরও ঘন ঘন সাক্ষাৎ হবে এবং সামনে বেরিয়ে আসবেন।