fgh
ঢাকারবিবার , ১৫ জুন ২০২৫
  • অন্যান্য

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত, আঞ্চলিক উত্তেজনা না কি বৈশ্বিক সঙ্কট?

অনলাইন ডেস্ক
জুন ১৫, ২০২৫ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ । ৩৪ জন

বর্তমানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা সীমিত আকারে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহল বারবার শান্তির আহ্বান জানালেও, যদি এই বার্তা উভয় পক্ষই উপেক্ষা করে, তাহলে এই সংঘাত এক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—যার পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়া দিতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি জড়িয়ে পড়বে?
ইরানের ধারণা, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় আমেরিকার নীরব সমর্থন রয়েছে। ফলে ইরান মার্কিন বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

বিশেষ করে ইরাক, উপসাগরীয় ঘাঁটি কিংবা কূটনৈতিক স্থাপনায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মার্কিন নাগরিক বা সম্পত্তির উপর হামলা হলে তা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি কোনও মার্কিন নাগরিক হতাহত হন, তাহলে আমেরিকা নিজেকে আর নিরপেক্ষ রাখতে পারবে না। রিপাবলিকান নেতাদের একটি অংশ চাইছেন ইরানে সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হোক, বিশেষ করে যদি পারমাণবিক হুমকি অব্যাহত থাকে।
 

উপসাগরীয় দেশগুলিও ঝুঁকিতে
ইরান যদি ইসরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার নজর যেতে পারে উপসাগরীয় অঞ্চলের উপর—বিশেষ করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর তেলক্ষেত্র ও সামরিক ঘাঁটিগুলিতে। অতীতে এমন হামলার নজির রয়েছে। এই অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, অনেক দেশ গোপনে ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় সহায়তা করেছে। উপসাগরে নতুন হামলা হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল—দুই পক্ষই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে জড়াতে বাধ্য হতে পারে।

 

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কি আসল টার্গেট?
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা কেবল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিই লক্ষ্য করছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে—এই আক্রমণ যদি ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রুখতে ব্যর্থ হয়? ফোর্ডোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা কেবল মার্কিন বাহিনীরই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান যদি পরমাণু বোমার দৌড়ে আরও জোর দেয়? যদি শাসকগোষ্ঠীর নেতৃত্ব আরও কট্টরপন্থায় চলে যায়? তাহলে ইসরায়েল হয়তো বারবার আঘাত হানবে—এবং এই চক্রের কোনও শেষ থাকবে না।

বিশ্ব অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য ধাক্কা
তেলের দাম ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেয় বা হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে হামলা জোরদার করে, তাহলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

এতে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা গভীর হবে। রাশিয়া এই সুযোগে তেলের দাম থেকে লাভবান হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আরও অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। ফলে এই সংঘাত বিশ্ব রাজনীতির আরও বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

ইরানের শাসনব্যবস্থা পতনের আশঙ্কা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য শুধু পরমাণু কর্মসূচি থামানো নয়—ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে উৎখাত করাও তার অভিপ্রায়। কিন্তু যদি সরকার পতনের পর ইরানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়? যদি লিবিয়া বা ইরাকের মতো শূন্যতা তৈরি হয়? তাহলে পুরো অঞ্চলই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দুইটি এখনো রয়ে গেছে:
ইরান কীভাবে এবং কতটা শক্তভাবে প্রতিশোধ নেবে?

আমেরিকা ইসরায়েলকে কতটা সংযত রাখতে পারবে—আসলে আদৌ পারবে কি? এই দুইটি প্রশ্নের জবাবের উপরই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা।

বর্তমানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা সীমিত আকারে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহল বারবার শান্তির আহ্বান জানালেও, যদি এই বার্তা উভয় পক্ষই উপেক্ষা করে, তাহলে এই সংঘাত এক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—যার পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়া দিতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি জড়িয়ে পড়বে?
ইরানের ধারণা, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় আমেরিকার নীরব সমর্থন রয়েছে। ফলে ইরান মার্কিন বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

বিশেষ করে ইরাক, উপসাগরীয় ঘাঁটি কিংবা কূটনৈতিক স্থাপনায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মার্কিন নাগরিক বা সম্পত্তির উপর হামলা হলে তা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি কোনও মার্কিন নাগরিক হতাহত হন, তাহলে আমেরিকা নিজেকে আর নিরপেক্ষ রাখতে পারবে না। রিপাবলিকান নেতাদের একটি অংশ চাইছেন ইরানে সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হোক, বিশেষ করে যদি পারমাণবিক হুমকি অব্যাহত থাকে।
 

উপসাগরীয় দেশগুলিও ঝুঁকিতে
ইরান যদি ইসরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার নজর যেতে পারে উপসাগরীয় অঞ্চলের উপর—বিশেষ করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর তেলক্ষেত্র ও সামরিক ঘাঁটিগুলিতে। অতীতে এমন হামলার নজির রয়েছে। এই অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, অনেক দেশ গোপনে ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় সহায়তা করেছে। উপসাগরে নতুন হামলা হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল—দুই পক্ষই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে জড়াতে বাধ্য হতে পারে।

 

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কি আসল টার্গেট?
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা কেবল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিই লক্ষ্য করছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে—এই আক্রমণ যদি ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রুখতে ব্যর্থ হয়? ফোর্ডোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা কেবল মার্কিন বাহিনীরই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান যদি পরমাণু বোমার দৌড়ে আরও জোর দেয়? যদি শাসকগোষ্ঠীর নেতৃত্ব আরও কট্টরপন্থায় চলে যায়? তাহলে ইসরায়েল হয়তো বারবার আঘাত হানবে—এবং এই চক্রের কোনও শেষ থাকবে না।

বিশ্ব অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য ধাক্কা
তেলের দাম ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেয় বা হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে হামলা জোরদার করে, তাহলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

এতে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা গভীর হবে। রাশিয়া এই সুযোগে তেলের দাম থেকে লাভবান হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আরও অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। ফলে এই সংঘাত বিশ্ব রাজনীতির আরও বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

ইরানের শাসনব্যবস্থা পতনের আশঙ্কা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য শুধু পরমাণু কর্মসূচি থামানো নয়—ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে উৎখাত করাও তার অভিপ্রায়। কিন্তু যদি সরকার পতনের পর ইরানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়? যদি লিবিয়া বা ইরাকের মতো শূন্যতা তৈরি হয়? তাহলে পুরো অঞ্চলই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দুইটি এখনো রয়ে গেছে:
ইরান কীভাবে এবং কতটা শক্তভাবে প্রতিশোধ নেবে?

আমেরিকা ইসরায়েলকে কতটা সংযত রাখতে পারবে—আসলে আদৌ পারবে কি? এই দুইটি প্রশ্নের জবাবের উপরই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা।

বর্তমানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা সীমিত আকারে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহল বারবার শান্তির আহ্বান জানালেও, যদি এই বার্তা উভয় পক্ষই উপেক্ষা করে, তাহলে এই সংঘাত এক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—যার পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়া দিতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি জড়িয়ে পড়বে?
ইরানের ধারণা, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় আমেরিকার নীরব সমর্থন রয়েছে। ফলে ইরান মার্কিন বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

বিশেষ করে ইরাক, উপসাগরীয় ঘাঁটি কিংবা কূটনৈতিক স্থাপনায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মার্কিন নাগরিক বা সম্পত্তির উপর হামলা হলে তা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি কোনও মার্কিন নাগরিক হতাহত হন, তাহলে আমেরিকা নিজেকে আর নিরপেক্ষ রাখতে পারবে না। রিপাবলিকান নেতাদের একটি অংশ চাইছেন ইরানে সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হোক, বিশেষ করে যদি পারমাণবিক হুমকি অব্যাহত থাকে।
 

উপসাগরীয় দেশগুলিও ঝুঁকিতে
ইরান যদি ইসরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার নজর যেতে পারে উপসাগরীয় অঞ্চলের উপর—বিশেষ করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর তেলক্ষেত্র ও সামরিক ঘাঁটিগুলিতে। অতীতে এমন হামলার নজির রয়েছে। এই অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, অনেক দেশ গোপনে ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় সহায়তা করেছে। উপসাগরে নতুন হামলা হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল—দুই পক্ষই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে জড়াতে বাধ্য হতে পারে।

 

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কি আসল টার্গেট?
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা কেবল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিই লক্ষ্য করছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে—এই আক্রমণ যদি ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রুখতে ব্যর্থ হয়? ফোর্ডোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা কেবল মার্কিন বাহিনীরই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান যদি পরমাণু বোমার দৌড়ে আরও জোর দেয়? যদি শাসকগোষ্ঠীর নেতৃত্ব আরও কট্টরপন্থায় চলে যায়? তাহলে ইসরায়েল হয়তো বারবার আঘাত হানবে—এবং এই চক্রের কোনও শেষ থাকবে না।

বিশ্ব অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য ধাক্কা
তেলের দাম ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেয় বা হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে হামলা জোরদার করে, তাহলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

এতে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা গভীর হবে। রাশিয়া এই সুযোগে তেলের দাম থেকে লাভবান হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আরও অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। ফলে এই সংঘাত বিশ্ব রাজনীতির আরও বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

ইরানের শাসনব্যবস্থা পতনের আশঙ্কা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য শুধু পরমাণু কর্মসূচি থামানো নয়—ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে উৎখাত করাও তার অভিপ্রায়। কিন্তু যদি সরকার পতনের পর ইরানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়? যদি লিবিয়া বা ইরাকের মতো শূন্যতা তৈরি হয়? তাহলে পুরো অঞ্চলই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দুইটি এখনো রয়ে গেছে:
ইরান কীভাবে এবং কতটা শক্তভাবে প্রতিশোধ নেবে?

আমেরিকা ইসরায়েলকে কতটা সংযত রাখতে পারবে—আসলে আদৌ পারবে কি? এই দুইটি প্রশ্নের জবাবের উপরই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা।

বর্তমানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা সীমিত আকারে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহল বারবার শান্তির আহ্বান জানালেও, যদি এই বার্তা উভয় পক্ষই উপেক্ষা করে, তাহলে এই সংঘাত এক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—যার পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়া দিতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি জড়িয়ে পড়বে?
ইরানের ধারণা, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় আমেরিকার নীরব সমর্থন রয়েছে। ফলে ইরান মার্কিন বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।

বিশেষ করে ইরাক, উপসাগরীয় ঘাঁটি কিংবা কূটনৈতিক স্থাপনায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মার্কিন নাগরিক বা সম্পত্তির উপর হামলা হলে তা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি কোনও মার্কিন নাগরিক হতাহত হন, তাহলে আমেরিকা নিজেকে আর নিরপেক্ষ রাখতে পারবে না। রিপাবলিকান নেতাদের একটি অংশ চাইছেন ইরানে সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হোক, বিশেষ করে যদি পারমাণবিক হুমকি অব্যাহত থাকে।
 

উপসাগরীয় দেশগুলিও ঝুঁকিতে
ইরান যদি ইসরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার নজর যেতে পারে উপসাগরীয় অঞ্চলের উপর—বিশেষ করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর তেলক্ষেত্র ও সামরিক ঘাঁটিগুলিতে। অতীতে এমন হামলার নজির রয়েছে। এই অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, অনেক দেশ গোপনে ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় সহায়তা করেছে। উপসাগরে নতুন হামলা হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল—দুই পক্ষই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে জড়াতে বাধ্য হতে পারে।

 

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কি আসল টার্গেট?
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা কেবল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিই লক্ষ্য করছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে—এই আক্রমণ যদি ইরানের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রুখতে ব্যর্থ হয়? ফোর্ডোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা কেবল মার্কিন বাহিনীরই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান যদি পরমাণু বোমার দৌড়ে আরও জোর দেয়? যদি শাসকগোষ্ঠীর নেতৃত্ব আরও কট্টরপন্থায় চলে যায়? তাহলে ইসরায়েল হয়তো বারবার আঘাত হানবে—এবং এই চক্রের কোনও শেষ থাকবে না।

বিশ্ব অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য ধাক্কা
তেলের দাম ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেয় বা হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে হামলা জোরদার করে, তাহলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

এতে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা গভীর হবে। রাশিয়া এই সুযোগে তেলের দাম থেকে লাভবান হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আরও অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। ফলে এই সংঘাত বিশ্ব রাজনীতির আরও বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

ইরানের শাসনব্যবস্থা পতনের আশঙ্কা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য শুধু পরমাণু কর্মসূচি থামানো নয়—ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে উৎখাত করাও তার অভিপ্রায়। কিন্তু যদি সরকার পতনের পর ইরানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়? যদি লিবিয়া বা ইরাকের মতো শূন্যতা তৈরি হয়? তাহলে পুরো অঞ্চলই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দুইটি এখনো রয়ে গেছে:
ইরান কীভাবে এবং কতটা শক্তভাবে প্রতিশোধ নেবে?

আমেরিকা ইসরায়েলকে কতটা সংযত রাখতে পারবে—আসলে আদৌ পারবে কি? এই দুইটি প্রশ্নের জবাবের উপরই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, সারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা।