ঢাকারবিবার , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

তুরস্কের ১০টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্থ : এরদোগান

ইনটারন্যাশনাল ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩ ৭:০৩ পূর্বাহ্ণ । ৯১ জন
তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান

তুরস্কে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে দেশটিতে যে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উপায় হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলি জানিয়েছে, শুক্রবার আদিয়ামান প্রদেশে উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযান পর্যবেক্ষণে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। গত সোমবারের (৬ ফেব্রুয়ারি) ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন এক কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ।

বিগত দুই দশক তুরস্ক শাসন করা এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই বেদনাকে (দুর্দশা) রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, সেটা কোনোভাবেই করতে দেওয়া হবে না।

এরদোগান আরও বলেন, সরকার ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এসব এলাকায় কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটলে সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করবে। বিষয়টি দেখতে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ রয়েছে।

‘কিছু অজ্ঞ লোক বাজারে ডাকাতি করছে, কর্মস্থলে হামলা করছে। যারা এই ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের ধরার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি অবস্থা চলাকালীন আইনের অধীনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ বলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

এ সময় এরদোগান ঘোষণা করেন যে, দক্ষিণের সানলিউরফা এবং কিলিস প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

তুর্কি নেতা জোর দিয়ে বলেন, তুরস্ক তার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ৭৫ হাজারের বেশি।

৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভয়াবহ ভূমিকম্প তুরস্কের পাশাপাশি প্রতিবেশী সিরিয়াতেও ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। দুই দেশ মিলে নিহতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কি নেতা এদিন বলেন, আমরা প্রতি পরিবারকে ১৫ হাজার লিরা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, যার মধ্যে স্থানান্তর সহায়তাও থাকছে৷ আমরা একটি ব্যাপক কর্মসূচি প্রস্তুত করছি, যা দেশকে, বিশেষ করে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোকে আবারও উঠে দাঁড়াতে সক্ষম করবে।

‘আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছি, নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হবে’, বলেন এরদোগান।

তিনি বলেন, তুর্কি এয়ারলাইন্স ক্ষতিগ্রস্তদের বিনামূল্যে স্থানান্তর করছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশ থেকে অন্তত ৭৬ হাজার মানুষকে সরিয়ে দেশের অন্যান্য অংশে পাঠানো হয়েছে।

তুর্কি নেতা স্বীকার করেন যে, এই বিপর্যয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না রাষ্ট্র। ‘আমরা এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি লোক নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল গঠন করেছি। কিন্তু বিস্তৃত এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ এত বেশি যে, আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গতিতে উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে পারিনি’, বলেন এরদোগান।

তর্কি নেতা বলেন, ভূমিকম্পের বিধ্বংসী প্রভাব ৫০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া এই অঞ্চল একটি তীব্র শীতের সম্মুখীন হচ্ছে, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি। এটি আমাদের সামনে আরেকটি বাধা।