ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২ মার্চ ২০২৩
  • অন্যান্য

কুরআনের আয়াত বা আজান ব্যবহার করা যাবে কী ওয়েলকাম টিউনে ?

অনলাইন ডেস্ক
মার্চ ২, ২০২৩ ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ । ৯৯ জন
কুরআনের আয়াত বা আজান ওয়েলকাম টিউনে

প্রশ্ন: গানের ব্যবহার যেহেতু নাজায়েজ তাই অনেকেই এক্ষেত্রে কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত, আজান ইত্যাদি ডাউনলোড করে থাকে। ধারণা করা হয় যে, এতে গুনাহ তো হবেই না, বরং আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষমান ব্যক্তি কিছু সময় হলেও কুরআনের তিলাওয়াত শুনছে। বাহ্যত এটাকে ভালো মনে করা হয়।

আজানের শব্দ বা জিকির শুনছে। এতে শ্রোতাকে সওয়াবের বিষয় শোনানো হচ্ছে। এ দৃষ্টিতে একে অনেকেই ভালো বলে। জানতে চাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন, জিকির, আজানের ব্যবহারের হুকুম কী?

উত্তর: নিঃসন্দেহে প্রশ্নের উদ্দেশ্যেটি ভালো। রিংটোন, মিউজিক বা গান না শুনিয়ে তার বদলে কুরআনের তিলাওয়াত বা জিকির, আজান ইত্যাদি শোনানোর ব্যবস্থা করা অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় কাজ। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এটি ভালো মনে হলেও এক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারে একাধিক খারাপ দিক রয়েছে। যার একটিই এ থেকে বিরত থাকার জন্য যথেষ্ট। যেমন-

(১) ওয়েলকাম টিউনের ব্যবহার হয় যার কাছে কল করা হয়েছে তার সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে কি না এটি বোঝার জন্যই। কারো কাছে কল করার পর রিংটোন পেলে বুঝা যায় যে, তার মোবাইলে রিং হচ্ছে। কল করার পর বিজিটোন আসলে বুঝা যায় তিনি এখনও অন্যের সঙ্গে কথা বলছে। আবার ফোন বন্ধ থাকলেও এক ধরনের টোন পাওয়া যায়।

মোটকথা কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগের জন্য যে সংকেত-টোন রয়েছে সেস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত, আজান ইত্যাদি ফিট করলে এই তিলাওয়াত ও আজানও ফোনকারীকে প্রথমে ওই টোনের কাজ দিবে। অর্থাৎ ফোনকারী বুঝবে যে, কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ পেয়েছে, রিং হচ্ছে।

আচ্ছা, বলুন তো আল্লাহর মহান কালাম কি এই কাজে ব্যবহার করা উচিত? এই কাজে তিলাওয়াতের ব্যবহার কি অপাত্রে কুরআনের ব্যবহার নয়? আজান যা শরীয়তের একটি মহান নিদর্শন ও জিকির, একে এই কাজে ব্যবহার করা কি সমীচীন?

(২) কাঙ্ক্ষিত নাম্বারে কল করার পর রিংটোন হিসাবে ফোনকারীর কানে কুরআনের তিলাওয়াত ভেসে আসছে, হয়ত রিসিভের অপেক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তিলাওয়াতও শুনছে। কিন্তু যার নাম্বারে ফোন করা হয়েছে সে তো তিলাওয়াত শুনতে পাচ্ছে না। বিধায় সে এমন সময় রিসিভ করল যখন তিলাওয়াতের কোন শব্দের মাঝে কিংবা এমন স্থানে রিসিভ করা হল যখন থেমে গেলে আয়াতের অর্থই বদলে যায়।

তদ্রূপ আজান ডাউনলোড করলে কেউ যদি ‘লা-ইলাহা’ পর্যন্ত উচ্চারিত হওয়ার পর ফোন রিসিভ করে ফেলে তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- ‘কোন মাবুদ নেই।’ ফলে অর্থের বিকৃতি ঘটে। এই সমস্যার কারণেও এস্থানে এগুলোর ব্যবহার করা যাবে না।

(৩) এছাড়া বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যে থেকে ফোনে কথা বলার সময় কানে তিলাওয়াতের ধ্বনি আসলেও তা মনোযোগ সহকারে শোনা হয় না। ফলে তিলাওয়াত শোনার হক আদায় হয় না। তাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন-তিলাওয়াত বা আজান কিংবা জিকিরের ব্যবহার করা যাবে না। এর জন্য স্বাভাবিক রিংটোনই উপযোগী।

সূত্র: আত-তিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন- নববী ৪৬, হককুত্তিলাওয়া-হুসাইনী শাইখ উসমান-৪০১, আলমগীরী ৫/৩১৫, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, আল মুগনী ৪/৪৮২, আলাতে জাদীদাহ কী শরয়ী আহকাম- ১৭১