সামাজিকমাধ্যমে আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। প্রথমে মিউজিক ভিডিওতে মডেল হওয়ার মাধ্যমে যাত্রা করলেও পরবর্তীতে কখনো গান গাওয়া, সিনেমা নির্মাণ, কবিতা আবৃত্তি করা এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছেন তিনি। সমাজের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রায় সময়ই আলোচনায় থাকেন হিরো আলম।
রোববার অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি অনুষ্ঠানে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে। যে উত্থান কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির উত্থান। এই উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে, এটা যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।’
সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে হিরো আলম বলেন, ‘তাদের মতো এতো বড় মানুষ আমাকে নিয়ে কথা বলেছেন। এটা আমার জন্য সৌভাগ্য।
মানুষের রুচি নাকি নষ্ট হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি নাকি ১৮ কোটি লোকের রুচি নষ্ট করেছি। আপনারা কেন আমাকে সাপোর্ট করেন, রুচি নষ্ট করেন।’
এই ইউটিউবার বলেন, ‘স্যার আপনি আমাকে নিয়ে যে কথাবার্তা বলেছেন, অনেক আর্টিস্ট আপনার হাতে তৈরি। অনেক লোক আপনার হাতে তৈরি। স্যার আপনি ইচ্ছে করলে কিন্তু আমাকে তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু করেন না।
এখানেই না থেমে হিরো আলম আরও বলেন, আপনাদের টাকা আছে, শ্রম আছে, অনেক কিছুই আছে কিন্তু আপনারা হিরো আলমকে তৈরি করবেন না। তৈরি করতে পারবেনও না।
মামুনুর রশীদের কাছে আহ্বান জানিয়ে হিরো আলম বলেন, মামুনুর রশিদ স্যার, আসুন আমাকে তৈরি করুন। আমাকে তৈরি করতে এলে বাংলাদেশের বড় বড় লোক যারা আছে তারা সবাই আপনাকে ধুয়ে দেবে। যে মামুনুর রশিদের মত লোক হিরো আলমকে নিয়ে নাটক বানাচ্ছে, সিনেমা বানাচ্ছে। এমন হলে আমাকে তৈরি করবে কে? রুচির পরিবর্তন কোন জায়গা থেকে হবে?
রুচিবান লোক বাংলাদেশে কোনোদিনও হবে না উল্লেখ করে হিরো আলম বলেন, যারা রুচিবান লোক তারা রুচিদার লোক তৈরি করবে না। কারণ আপনারা তেলওয়ালা মাথায় তেল দেবেন, যাদের টাকা আছে তাদের দাম দেবেন। যাদের চেহারা সুন্দর তাদেরই মূল্য দেবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘হিরো আলমের জন্য বাংলাদেশ নাকি নষ্ট হচ্ছে। যখন নাটকে গালিগালাজ করে, তখন কি আপনাদের রুচি নষ্ট হয় না।’
হিরো আলম বলেন, ‘আমার কী অপরাধ, কেন আমার লেখাপড়া নাই, চেহারা নাই? আপনার ছেলে যদি হতাম আমি। এভাবে বলতে পারতেন কেউ। হিরো আলমের মামা খালু নাই, ওয়েট নাই। অনেক এমপি দেখছি- সমাজের, দেশের, মানুষের কথা বলে না। নিজেরা ব্যস্ত।’
মানুষের রুচি কেন নষ্ট হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘কয়টা লোকের রুচি আছে, সংসদে যারা; তাদের কয়জনের লেখাপড়া আছে। ১৮ কোটি লোক থাকতে আমাকে নিয়ে কেন রুচিতে বাধে আপনাদের।’
হিরো আলম বলেন, ‘আজ আমার জন্য কে দায়ী। আরে ভাই, আপনার আমাকে নিয়ে কথা কেন বলেন। কেন ভাই। একদিন এমন লাইভ করে পৃথিবী থেকে চলে যাব। আপনার রুচি নিয়ে থাকেন। আমি যদি আত্মহত্যা করি, এর জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা। মানুষ আত্মহত্যা কখন করে জানেন? সবকিছুতে টর্চারিং করতেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হিরো আলমের কাজগুলো দেখেন, রুচি আছে কিনা। কত রুচি সম্পন্ন গান উপহার, নাটক বানাতে পারি। এতে আমার কী করণীয়। ’
হিরো আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি আমাকে জেলে দেন। আমাকে সাহায্য করেন কেউ? করেন, করেন না। আমাকে ধিক্কার দেওয়া বন্ধ করুন। আপনারা বড় বড় কথাবার্তা বলেন। রুচি চেঞ্জ করতে পারেন না কেন। ’
তিনি বলেন, ‘আমি কি অপরাধ করেছি। আমি যদি রুচি নষ্ট করে থাকি, টিকটক দেখেন তো; কেন তাদের বন্ধ করতে পারতেছেন না। অন্যদের নিয়ে কথাবার্তা বলেন না। এসবের জন্য আমি যদি আত্মহত্যা করি; এর জন্য দায়ী থাকবেন রুচিসম্পন্ন মানুষেরা। অন্যদের মতো আমি তো এই রুচি নিয়ে আসি নাই।’