ঢাকাবুধবার , ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

কলকাতার ‘হান্ড্রেড মাইলস’ সদস্যরা সাইকেলে ঢাকায়

অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ ৮:১২ পূর্বাহ্ণ । ৯৮ জন
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কলকাতা থেকে চাইকেল চালিয়ে আসা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা

‘বাংলাদেশে কেন্দ্রীয়ভাবে ভাষা নিয়ে যে বর্ণাঢ্য আয়োজন, যে উন্মাদনা, তা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করা অনেক গর্বের। তাই আমরা কাঁটাতারের ব্যবধান মুছে ৫০০ কিলোমিটার সাইকেলে চড়ে এখানে এসেছি’—আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এভাবেই অভিব্যক্তির কথা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন ভারত থেকে আসা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বাংলা ভাষা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষাগুলোর মধ্যে জীবন্ত থাকুক, সে প্রত্যাশার কথাও জানান এই বাংলা ভাষাপ্রেমীরা।

২০১২ সাল থেকে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কলকাতা থেকে সাইকেলে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন ভারতীয় একদল নাগরিক। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হুগলির চন্দননগর থেকে সাইকেল নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় দলটি। সবার গায়ে ছিল হলুদ গেঞ্জি। গত সোমবার পৌঁছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় ওপার বাংলার এই দলকে।

তারা জানান, কলকাতায়ও ছোট পরিসরে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। তবে যেখানে ভাষাসৈনিকরা শহীদ হয়েছেন, সেখানে এসে শ্রদ্ধা জানানোর অনুভূতি অন্যরকম। এই দলের সদস্য শৈবাল ব্যানার্জি বলেন, বাংলাদেশই সেই দেশ, যে দেশের মানুষ ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সালাম, বরকত, জব্বারসহ অনেকে মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। একুশে ফেব্রুয়ারি অনেক বেশি পাওয়ার, অনেক বেশি দেওয়ার। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন, আমাদের শিকড় এই বাংলা ভাষা। ভারতীয় দলটিতে অন্যদের মধ্যে আছেন মহুয়া ব্যানার্জি, অঞ্জন দাশ, শ্রীকান্ত মণ্ডল, প্রসেনজিৎ সরকার, প্রণব মাইতি, সত্যব্রত ভাণ্ডারী, রমজান আলীসহ মোট ১৫ জন।

তারা জানান, পশ্চিমবঙ্গের ‘হান্ড্রেড মাইলস’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে তারা সাইকেল চালিয়ে ঢাকায় এসেছেন। এক দশক ধরে তারা নিয়মিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকা এসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

গৌতম মৃধা বলেন, আমাদের স্লোগান হলো ‘বাংলা কখনো হয় না ভাগ, বাংলা ভাষায় আমরা এক’। এপার-ওপার যে নামেই ডাকি, ভাষার বাঁধনে বাঁধা দুই দেশ। সেই বাঁধন থেকেই আমরা বাংলাদেশে আসি ভাষা দিবসে। আগামীতেও আসব।

আরেক সদস্য তপন কুমার রায় বলেন, এর আগেও তিনবার এসেছি। এ দেশে আসতে ভালো লাগে। দুই দেশে ভাষা-সংস্কৃতিতে আমরা এক। ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকে আমাদের এই সাইকেল র্যালি।

শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে মঙ্গলবারই ভারতের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথাও জানান তারা। এই প্রতিনিধি দলে চিকিৎসক, শ্রমিক, কলেজ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিজীবীও রয়েছেন।