ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • অন্যান্য

এখন আমাদের বিজয়ের অপেক্ষা: মির্জা ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক
অক্টোবর ১৯, ২০২৩ ৯:১৮ অপরাহ্ণ । ৭৮ জন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেছেন, যারা ক্ষমতাসীন তারা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট। আর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াইটা খুব সহজ নয়। এখানে মৌলিক পার্থক্য হলো, অস্ত্র-শস্ত্র, রাষ্ট্র ক্ষমতা সবকিছুকে নিয়ে সে আক্রমণ করে।

আর আমরা জনগণকে নিয়ে সেই আক্রমণ প্রতিহতের চেষ্টা করি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সবচেয়ে বড় সফলতা হলো দেশের সব মানুষকে এক করতে পেরেছি। দেশের রাজনৈতিক চিন্তার মানুষ (ডান-বাম) সবাইকে এক করতে পেরেছি। এখন শুধু চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা।

এতে ২০১৩ সালে গুমের শিকার দারুস সালাম থানা ছাত্রদল সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: রাশেদের ছোট ছেলে রিমন রাশেদ, বংশাল থানা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজে ছোট মেয়ে হৃদি, ২০১৮ সালে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো সিরাজগঞ্জ মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরি বেগম, ২০২২ সালে মুন্সিগঞ্জের মোক্তারপুর ফেরিঘাটে পুলিশের গুলিতে মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রী জাহাঙ্গীর মাতবর, ২০২২ সালে গুলিবিদ্ধ হয়ে চোখের কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক এজিএস মো. আরিফ বিল্লাহ, ২০১৩ সালে গুম হওয়া তেজগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো: কাউসারের মেয়ে মিমসহ কয়েকজন তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। এ সময় তাদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে জেডআরএফ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের রাজনীতি চরম সঙ্কটে আছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে আমরা এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি। এ সঙ্কট ও শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের মানুষ ও দল এবং আমরা যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শের রাজনীতি করি তারা মোকাবিলা করছি। এসবকে মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যেসব নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের অবদান বৃথা যাবে না।

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, জেডআরএফ’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ডা. এএইচএস পারভেজ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, ডা. এম এ সেলিম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক আতাউর রহমান, আমিরুল ইসলাম কাগজী, ড. এমতাজ হোসেন, ড. আবু জাফর খানসহ অনেকে।

আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে: এর আগে দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটা দল, যারা সবসময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। আওয়ামী লীগ প্রতারক দল, জনগণের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।

‘গণতন্ত্র ও এক দফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন হরতাল করেছে। এখন চিৎকার করে বলছেন, ওটা নাকি আজিমপুর কবরস্থানে চলে গেছে। কবর দিয়ে দিয়েছেন। যেটার কবর হয়ে যাবে, সেটা নিয়ে ১৭৩ দিন হরতাল করলেন কেন? আওয়ামী লীগ হরতালের সময় বাসে গান পাউডার দিয়ে মানুষ মেরেছে- এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এতগুলো মানুষকে মারলেন কেন?

জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা মেনে নিয়ে সে সময় বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ জানে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হলে জনগণ ভোট দিতে পারলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সুতরাং তারা ওটাতেই লেগে আছে সংবিধানের মধ্যেই তাকে নির্বাচন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশে এমন সংস্কৃতি হয়েছে যে একটা দল আরেকটা দলকে বিশ্বাস করে না। ৫২ বছর পরও  চিন্তা করতে হয় এই সরকারের অধীন নির্বাচনে ঠিক হয় না। পাকিস্তানও নির্বাচন পদ্ধতি উন্নতি করে ফেলেছে। নেপাল-মালদ্বীপ সুষ্ঠু করে ফেলেছে। এখন শ্রীলঙ্কাও। তাহলে আমরা কেন পারছি না। আমরা পারছি না একটা রাজনৈতিক দলের কারণে, সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কারণে।

সরকারের বিরুদ্ধে যারা যুগপৎ আন্দোলন করছেন না, তারাও এই সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি, বাম ফ্রন্ট, জামায়াতে ইসলাম, চরমোনাই পীর- সবাই বলছে এ সরকারের অধীন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি জাতীয় পার্টিও বলেছে।

তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, এখন সময় আছে, সেফ এক্সিট নিন। পদত্যাগ করে সরে গিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। নতুবা জনগণের আন্দোলনে আপনাদের করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে।

সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়কারী ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- বিকল্প ধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি মন্ডল, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এস এম শাহাদত হোসেন, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ন্যাপ ভাসানীর এস এম শাওন সাদেকি প্রমুখ।