আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর সদরঘাট থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাংলাবাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিল ও সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মাওলানা আবু সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি তাকরিম হোসাইন, ঢাকা কলেজ সেক্রেটারি মুসআব আব্দুল্লাহ সহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন থানা আমীর-সেক্রেটারি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের কবলে পড়ে বাংলাদেশের জনগণ এক দুর্যোগপুর্ণ ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে।
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী এই সরকার বাংলাদেশকে আজ সারাবিশ্বের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে একটি ঝুঁকিপুর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আওয়ামী সরকার আপরাধ করতে করতে আজ এমন অবস্থায় পৌছে গেছে যে, এখন নিজেরা বাঁচার জন্য দেশের ১৮ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, আমরা রক্ত দেব, জীবন দেব তবুও এদেশকে নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দিবোনা।
তিনি বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ ফাঁসীর মঞ্চে জীবন দিয়েছেন, আমরা হামলা-মামলা, গুম-খুন মুকাবেলা করেছি, আমরা কোন রক্তচক্ষুকে ভয় পায়না। আমাদের পুলিশ দিয়ে, ছাত্রলীগ যুবলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে স্তব্ধ করা যাবেনা। আগামীতে যদি এই সরকার মুক্তিকামী জনগণের উপর আর কোন অন্যায় আক্রমণ চালায় তাহলে রাজপথেই তা প্রতিহত করা হবে ইনশাআল্লাহ। যারা মনে করেন পুলিশ দিয়ে, পেটুয়া বাহিনী দিয়ে গুলি করে আমাদেরকে দমন করবেন তাদেরকে বলতে চাই, আপনাদের গুলি বুকে ধারণ করেই এদেশের মানুষকে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবের সময় আওয়ামী লীগ কম্বল চোর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল আর আজ শেখ হাসিনার সময় ভোট চোর হিসেবে সারাবিশ্বের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ মানেই ধর্ষকদের সংগঠন, আওয়ামী লীগ মানেই গুম-খুন ও দেশ বিক্রির সংগঠন, আওয়ামী লীগ মানেই আধিপত্যবাদের কড়াল গ্রাসে আমার সোনার বাংলাদেশ। ফলে এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের আর কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবেনা। তিনি ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্লজ্জের মতো আমেরিকায় অবস্থান না করে দেশে এসে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় রাজপথের সংগ্রামের মাধ্যমেই এদেশের জনগণ আপনাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে, তখন আর পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার জনগণের আন্দোলনে ভীত হয়ে তা প্রতিহত করতেই মুলত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও আলেম ওলামাদের বন্দী করে রেখেছে। আমরা আজকের সমাবেশ থেকে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মু. সেলিম উদ্দিন, শাহজাহান চৌধুরীসহ সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও আলেম ওলামাদের মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। নতুবা দেশবাসী রাজপথের দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদেরকে মুক্ত করে আনবে ইনশাআল্লাহ। তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঢাকাবাসী সহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে এসে ভুমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।